আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপঃ খুলনার উপকুলিয় উপজেলা দাকোপে করোনা পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে ত্রান বিতরন নিয়ে কিছু অভিযোগ। মধ্যবিত্তদের সঞ্চিত অর্থ ফুরিয়ে আসছে কিন্তু ত্রানের তালিকায় ঠাঁই মিলছেনা তাদের। উপজেলায় এ পর্যন্ত সংগ্রিহত ৪৬ জনের নমুনায় করোনার লক্ষন না পাওয়ায় স্বস্তিদায়ক অবস্থায় দাকোপ।
জেলার মধ্যে অনুন্নত উপজেলা দাকোপবাসীর অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামুলকভাবে পিছিয়ে। সমগ্র উপজেলায় মধ্যবিত্ত এবং নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশী। উপজেলার কর্মক্ষম মানুষের বড় একটি অংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নির্দেশনা পালনে প্রথম থেকে সচেষ্ট থাকায় এখানে অদ্যবধী উদ্বেগজনক কোন কিছু দৃশ্যমান হয়নি। প্রশাসনের নজরদারী আর নিজেদের সচেতনতায় দাকোপের অধিকাংশ মানুষ তাদের পেশা ত্যাগ করে ঘরে উঠে গেছে। উপজেলার মধ্যবিত্ত এবং নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের এখন নাকাল অবস্থা। হতদরিদ্রদের মত তারা হাত পেতে কিছু চাইতে পারেনা, আবার টানা লগডাউনে থাকায় তাদের সঞ্চিত অর্থ ফুরিয়ে গেছে। ফলে বেঁচে থাকার জন্য এখন তাদের একমাত্র ভরসা সরকারী বেসরকারী ত্রান সহায়তা। কিন্তু সেই তালিকায় তাদের নামের যেন ঠাঁই মিলছেনা। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় সরকারী ত্রান সহায়তা হিসাবে এ পর্যন্ত ১ শ’ সাড়ে ৫৯ টন চাউল এবং ২ লাখ ৩৪ হাজার নগত টাকা কেবল খাদ্য সহায়তা ত্রান হিসাবে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরন করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় এমপির কোটা থেকে পৃথক বরাদ্দ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের সরকারী অনুদান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাবেক জনপ্রতিনিধিবৃন্দ ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উপজেলা প্রশাসন ও দাকোপ থানা পুলিশও ত্রান বিতরন করেছেন। অভিযোগ উঠেছে এই সব ত্রান বিতরনের ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও দলীয় পরিচয় গুরুত্ব পেয়েছে। এ ছাড়া পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী ভোট ব্যাংকের গুরুত্ব বুঝে ত্রানের তালিকায় নাম উঠছে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। ফলে পাওয়ার যোগ্য অনেকের যেমন না পাওয়ার অভিযোগ আছে, তেমনি উল্লেখিত যোগ্যতায় একই পরিবার ধারাবাহিক সুবিধা পেয়ে আসছে বলে প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে।
অপরদিকে দাকোপে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ৪ জনের নমুনাসহ মোট ৪৬ জনের করোনা ভাইরাস সন্দেহের নমুনা সংগ্রহ করে পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে করোনার কোন উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া দেশের অভ্যান্তরীন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে ৪০৩ জন। বর্তমানে উপজেলায় তরমুজসহ সব্জি বিক্রির মৌসুম শুরু হওয়ায় বহিরাগতদের আনা গোনার আশংকায় জনসাধারনের মাঝে কিছুটা উদ্বেগ বেড়ে গেছে। তবে আশার কথা উপজেলা প্রশাসন এ সকল ফসল কেনা বেচার জন্য বিশেষ সতর্কতামুলক ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।