দাকোপে লবন পানি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দু’টি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে

প্রকাশঃ ২০২০-০৩-১৫ - ১৯:১০

আজগর হোসেন ছাব্বির : দাকোপের তিলডাঙ্গায় লবন পানি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দু’টি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। গেটের ক্ষতিসাধন করে অবৈধভাবে পানি উত্তোলনের অভিযোগে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের। পুলিশী তদন্তে উপস্থিত এলাকাবাসী বিষয়টিকে মিথ্যে ষড়যন্ত্র মূলক আখ্যাদিয়ে কোর্টের নির্দেশনার অপব্যাখা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার ৭ নং তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে লবন পানি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’টি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। যার একটি পক্ষে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চিংড়ী চাষি অপর পক্ষে আছে বর্তমান চেয়ারম্যান সমর্থিত লবন পানির চিংড়ী চাষ বিরোধীরা। ইউনিয়নের গড়খালী এলাকায় পাউবোর ৩১ নং পোল্ডারের অধীন ৬ নং স্লুইজগেট ক্ষতি সাধন করে এবং গেটের মুখে দেওয়া বাঁধ কেটে লবন পানি উত্তোলন করা হয়েছে এমন অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজীসহ ৭ জনের নামে দাকোপ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১২ মার্চ পাউবোর কর্মচারী আবুল কালাম খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহার নামীয় আসামী শচীন গাইনকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গত শনিবার দাকোপ থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তে ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ৩১ নং পোল্ডারের ৪র্থ মৎস্য প্রকল্পের সাবেক সভাপতি ওই গ্রামের বাসিন্দা এ্যাডঃ মহানন্দ সরকার, সংশ্লিষ্ট গেট কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য আবুল কালাম শেখ, ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন সানা, স্থানীয় এ্যাডঃ মাসুদ করিম, রবীন্দ্রনাথ সরদার, বিনয় কৃষ্ণ রায়, আকবর পাইক, আফজাল গাজীসহ তদন্তস্থলে উপস্থিত প্রায় অধিকাংশ মানুষ মামলাটিকে মিথ্যে ষড়যন্ত্রের অংশ দাবী করে বলেন, গেটের ঢাকনা নষ্ট এবং ফল বোর্ড না থাকায় স্বাভাবিকভাবে পানি উঠা নামা করছে। এখানে আসামীরা কেউ গেটের ক্ষতি সাধন বা পানি তুলতে আসেনি। ইউপি সদস্য ও গেট কমিটির সভাপতি কালাম শেখ বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে গেটের ঢাকনা নষ্ট ও ফল বোর্ডের সমস্যার কথা অনেকবার বলেছি। কিন্তু তারা সেটা আমলে না নিয়ে এখন উল্টো মিথ্যে অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেছে। এ্যাডঃ মহানন্দ সরকার বলেন উপকুলিয় এলাকার এই গড়খালী মৌজা ৩য় ও ৪র্থ মৎস্য প্রকল্পের আওতায় বাগদা চিংড়ী ও সাদা মাছ চাষের জন্য অনুমোদিত এলাকা। কিছু বহিরাগত এবং যাদের জমি নেই তারা এটার বিরোধীতা করে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মহামান্য হাইকোর্টের ৫৭/১০ নং রীটের আলোকে দেওয়া রুল আদেশে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, আইন বিচার ও সংসদ বিভাগের মতামত অনুসারে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক যেহেতু লবন পানিতে চিংড়ী চাষ নিষিদ্ধ করা হয়নি সে ক্ষেত্রে উপকুলীয় অঞ্চলে পাউবোর বাঁধ/পোল্ডার ক্ষতিগ্রস্ত না করে স্লুইজগেট/রেগুলেটর বা অন্য কোন বৈধ উপায়ে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরনে বিগত ১৭/০৯/০৯ তারিখ খাদ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক জারীকৃত খাদুব্যম/প্রশা-১/২বি-৭/২০০৯/১০৮৭ নং স্বারক অনুযায়ী) জোয়ারের স্বাভাবিক প্রবাহ দ্বারা লবন পানি উঠানো অব্যগত রেখে চিংড়ী চাষ করা যাবে। তবে বিদ্যমান কৃষি জমিতে জোরপূর্বক লবন পানি প্রবেশ করিয়ে চিংড়ী চাষ করা যাবেনা। অপরদিকে চিংড়ী চাষ বিরোধী পক্ষ দাবী করছে আসামীরা গেটের ঢাকনার ক্ষতি সাধন করে এবং গেটমুখে দেওয়া বাঁধ রাতের আধারে কেটে এই পানি উত্তোলন করে এলাকার পরিবেশ প্রতিবেশের ক্ষতি সাধন করছে।