নুসরাত হত্যা মামলায় আজ ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

প্রকাশঃ ২০১৯-০৭-২৩ - ১৩:৫২

ঢাকা অফিস : আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ মঙ্গলবার সাক্ষ গ্রহণের ১৯তম কার্যদিবসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চার জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হবে।

বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে স্থানীয় লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ফজলুল করিম, মোসাম্মাৎ রাবেয়া আক্তার (উম্মে সুলতানা ওরফে পপির চাচী), ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন ও লক্ষীপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো জাফর ইকবালের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হবে।

এর আগে, গতকাল সোমবার আদালতে কনস্টেবল মো. রাসেল হোসেন, প্রবেশনাল সাব-ইন্সপেক্টর ডিএইচএম জহির রায়হান, নুসরাতের চাচা মো আজহারুল ইসলাম এমরান, চাচাতো ভাই মো. ওমর ফারুক এবং এএসআই মো আরিফুর রহমান- এই ৫ জনের সাক্ষগ্রহণ ও জেরা হয়েছে। এ নিয়ে গত সোমবার পর্যন্ত নুসরাত হত্যা মামলার ৩৭ জন সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।

সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই এ মামলার সাক্ষি ও জেরা কার্যক্রম চলছে। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম. শাহজাহান সাজু জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষি নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরে রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠি নাসরিন সুলতানা ফূ’র্তি, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা দোকানদার জসিম উদ্দিন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ, রাফির ছোট ভাই রাসেদুল হাসান রায়হান, ঔষদ দোকানদার জহিরুল ইসলাম ও হল পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, নুসরাতের মা শিরিন আক্তার ও মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল খায়ের, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ আবদুল হানিফ (মামুন), দোকানদার মো. ইউস‚ফ, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. হোসাইন, পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইয়াছিন ও এ্যাম্বুলেন্স চালক নুরুল করিম, মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরীক্ষার দিন কেন্দ্র সচিব মো. নুরুল আবছার ফারুকী, মাদ্রাসার ছাত্রী তানজিনা বেগম সাথী ও ছাত্রী বিবি জাহেদা ওরপে তামান্না, মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুদিস্তা খানম, মাদ্রাসার আয়া বেবি রানী দাস, ছাত্রী আকলিমা আক্তার ও ছাত্র মো. কায়সার মাহমুদ, ছাত্রী ফাহমিদা আক্তার হামদুনা, ছাত্রী নাসরিন সুলতানা ও পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ কবির আহাম্মদ, মাদ্রসার মাদ্রাসার ছাত্রী ও নুসারাতের সহপাঠি তাহমিনা আক্তার, ছাত্রী বিবি হাজেরা, ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক ও চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আকবর, কনস্টেবল মো. রাসেল হোসেন, প্রবেশনাল সাব-ইন্সপেক্টর ডিএইচএম জহির রায়হান, নুসরাতের চাচা মো আজহারুল ইসলাম এমরান, চাচাতো ভাই মো. ওমর ফারুক এবং এএসআই মো আরিফুর রহমান’র সাক্ষ ও জেরা শেষ হয়েছে।

গত ২৭ জুন অভিযোগ গঠনের পর পরই ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীপক্ষের ৩৭ সাক্ষীকে আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার জন্য উপস্থাপন করা হয়। গত ২০ জুন সাক্ষ্যগ্রহণের এই আদেশ দেন আদালত। এ মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সাতজন সাক্ষি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।