পাইকগাছার বাউখোলা নদীটি মৃত প্রায়

প্রকাশঃ ২০১৮-০৪-১০ - ২০:০১

পাইকগাছা : পাইকগাছার লস্কর ও চাঁদখালীর সীমানা ঘেষে প্রবাহিত বাউখোলা নদীটি মৃত প্রায়। দেখার কেউ নেই। প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকায়। ভূমি দস্যুরা নেমেছে অবৈধ দখলে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাঠামের স্লুইচ গেট হতে লক্ষ্মীখোলা ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার বাউখোলা নদীটি পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যা একের পর এক দখল করে নিচ্ছে ভূমি দস্যুরা। হারিয়ে যাচ্ছে বাউখোলার অতীত ঐতিহ্য। এক সময় উক্ত নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলতে দেখা যেত। ইঞ্জিন না থাকলেও পাল তোলা নৌকায় বসে মাঝিরা চলতো তাদের গন্তব্যে। এ নদী ছিল অনেকের জীবন-জীবিকার প্রধান উৎস। যার মধ্যে মাছ শিকার, খেয়া পারাপার, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত, কিংবা নৌভ্রমণ। যা আজ শুধুমাত্র কালের সাক্ষী হয়ে আছে। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিশাল এলাকা জুড়ে ভূমিদস্যুরা দখল করে নিয়েছে। আবার দখল করা নদীতে কোথাও কোথাও লাগানো হয়েছে কেওড়া, ওড়া ও গোলপাতা গাছ, আবার কেউ কেউ দখল করে মৎস্য চাষ করছে। এদিকে জবর দখলের ফলে নতুন নতুনভাবে ভরাটের প্রবণতা বেশি দেখা দিয়েছে। যে কারনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে নদীটির আয়তন। লক্ষ্মীখোলা ব্রীজ হতে বয়ে যাওয়া এই নদীটির পাশ দিয়ে কোন কেয়ারের রাস্তাও তৈরী হয়নি। পাইকগাছা ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এই নদীটির হাজার হাজার বিঘা জমি অর্থের বিনিময়ে ভূমিদস্যুদের নিকট বন্দোবস্ত প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। বন্দোবস্ত বিধিমালায় সরকারি কাজের ব্যবহারের জন্য নদী যথাযথভাবে ব্যবহার করা যাবে থাকলেও ভূমিদস্যুরা সেটা করতে দিচ্ছে না। যে কারণে নদীটি সুড়ঙ্গ পথের ন্যায় রূপ ধারণ করেছে। পানি সরবরাহের কোন আলামত নাই। আবার উক্ত নদীর সীমানায় মাঠামের গেট নামক একটি স্লুইচ গেট থাকলেও পানি সরবরাহ না থাকায় তা অকেজো হয়ে পড়েছে। গেটটি সংস্কার পূর্বক সচল করার জন্য পাউবো কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। এছাড়া উক্ত নদী মারা যাওয়ার কারণে এবং স্লুইচ গেট অকেজো থাকায় বর্ষা মৌসুমে এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। আবার শুষ্ক মৌসুমে মাঠ প্রান্তর ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ফলে মৎস্য চাষ অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে উক্ত ২টি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মৌজায় শ’শ’ ঘের মালিকরা পড়ে মহা বিপাকে। লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে,এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, নদীটি এক সময় ৩০-৪০ ফুট গভীর এবং প্রায় ১৫০ ফুট প্রস্থ নদীটি দিয়ে মানুষ নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাতায়াত করত। উক্ত নদী দিয়ে পানি সরবরাহ করে কয়েকটি গ্রাম সহ হাজার হাজার বিঘা জমির ফসলাদি উৎপাদন করা হতো। যা বর্তমান স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। নদীটি খনন করা একান্ত প্রয়োজন।