যশোর অফিস: যশোরের বাঘারপাড়ার শহীদ পরিবার ও মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলার স্বাক্ষীদের ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড করা হয়েছে। সেই সাথে আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসীরা বলেছেন, ৩০ জানুয়ারি গভীর রাতে বাঘারপাড়ার প্রেমচারা গ্রামে যশোর জেলা পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে এবং স্থানীয় খাজুরার ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ ও টুআইসি শরিফুলের সহযোগিতায় মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলায় আটক আমজাদ রাজাকারের মামলার সাক্ষী এহিয়ার মোল্যা, তার ভাগ্নে ফজের মোল্যা, ভাইপো আইয়ুব হোসেন, মাহাবুর রহমান, মফিজুর রহমান, মুস্তাক হোসেন, নিজাম মোল্যা, রেজাউল, মান্নান মোল্যা, সিদ্দিক হোসেনসহ আরো ৪/৫ জনের বসতবাড়িতে হামলা করে বসত ঘর, ঘরের আসবাবপত্র, রান্নাঘরে ভাংচুর চালায়।
এ সময় তারা ঘরে থাকা ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোটরসাইকেল, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি, শোকেস, তৈজসপত্র, ঘরের টিন ভাংচুর করে। পুলিশ এতটাই বেপরোয়া তান্ডব চালায় যে এদের অধিকাংশের বাড়িতে খাবারের জন্য ব্যবহার করার মতো তৈজসপত্রও ভাল নেই। ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা। তান্ডব চালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ দম্ভের সাথে বলে গেছে, ‘এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মুক্তিযোদ্ধা-টোদ্ধা দেখব না, ধরে এক একটাকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেব’।
জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি সকালে তরিকুল আনোয়ার টুটুল ওরফে টুটুল মন্ডল, আলম মোল্যা, টাক জাহিদসহ আমজাদ রাজাকার পক্ষীয়রা কলেজ ছাত্র সুমন ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যোগাযোগ করেছে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে তাকে হত্যাচেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় সুমনের ভাই রাকিব হোসেন বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় ২৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজাকার আমজাদ পক্ষের সন্ত্রাসীরা গত ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাতে আমজাদ রাজাকারের মামলার সাক্ষী এহিয়ার মোল্যা ও তার ভাইপো জহির মোল্যার উপর হামলা চালায়। এ সময় এহিয়ার মোল্যা পালিয়ে যেতে পারলেও জহির মারাত্মক আহত হয়ে বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এমন সংবাদে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রাজাকার আমজাদের সহযোগী সন্ত্রাসী বাহিনী।
উল্লেখ থাকে যে, সাক্ষী এহিয়ার মোল্যার ভাগ্নে এ্যাড. জহুরুল হক জহির জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা। সে কারণে এরা সকলেই তার কর্মী সমর্থক এবং মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোক। কিন্তু আমজাদ রাজাকারের সন্ত্রাসীরা এদেরকে নিজেদের পক্ষে না পেয়ে বরং আমজাদ রাজাকারের বিপক্ষে যাওয়ার কারণেই বারবার বিভিন্নভাবে হামলা-মামলা ও হুমকি-ধামকি এবং হত্যা চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে। আর এতদিন তাদের এ কাজে সহযোগিতা করে এসেছে স্থানীয় খাজুরা ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু গতকাল রাতে জেলা পুলিশও তাদের সাথে যোগ দেয় বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন।