ফুলতলায় অর্ধ ডজন মামলার আসামী এনামুল মহলদারের মুক্তিপণ ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ

প্রকাশঃ ২০১৭-০৮-২৮ - ১৩:৩১

খুলনা অফিস: ফুলতলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও আদালত কর্তৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ এনামুল মহলদারের মাদক ব্যবসা, অস্ত্রের মুখে চাঁদাবাজি, লুটপাট, মুক্তিপণ, ছিনতাই এ এলাকাবাসি অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে থানায় ৫টি মামলা, এর মধ্যে ১টিতে আদালত থেকে দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে থাকলেও পুলিশের খাতায় সে পলাতক ও ধরাছোয়ার বাইরে। শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসির কাছে এনামুল মহলদার এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। তার চাঁদাবাজির শিকার থানার গাড়াখোলা গ্রামের গোলাম মোস্তফা মোল্যার পুত্র মোঃ জনি মোল্যা রোববার বিকালে ফুলতলা রিপোর্টার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তৃতায় বলা হয়, গাড়াখোলা গ্রামের হাসান মহলদারের পুত্র মোঃ এনামুল মহলদার ও ছায়ের বিশ্বাসের পুত্র আব্দুল্লাহ বিশ্বাস তাদের ৫/৬ জনের স্বশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অস্ত্রেরমুখে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দস্যুতা ও মাদক ব্যবসায় লিপ্ত। গত ১৮ জুলাই সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় গাড়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে এনামুল মহলদার গং অতর্কিতভাবে জনি মোল্যার উপর হামলা ও কালো রং এর পিস্তল তার মুখের ভিতর ঢুকিয়ে জীবননাশের হুমকী দিয়ে ৪০হাজার টাকা ও ১৬ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা (নং-১৫) হলেও পুলিশ তাকে আটক করেনি। ২৬ জুন দিবাগত রাতে এনামুল মহলদার ও আব্দুল্লাহ বিশ্বাস গং একই গ্রামের কুদ্দুস গাজীর পুত্র মোঃ বাপ্পী গাজী (২৪) কে মুচিপাড়া রেল লাইনের পাশে বট গাছের নিচে মুক্তিপনের দাবিতে আটকে রাখে। পরে এনামুল মহলদারের কাছে নগদ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ কথা প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকী দেয়া হয়। অপহৃত বাপ্পী কাজীর মা মোছাঃ ফাতেমা বেগম বাদি হয়ে মামলা (নং-১, তারিখ-৪/০৮/২০১৭ইং) দায়ের করেন। তবে এ ক্ষেত্রেও পুলিশ নিরব। একই গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বর মোছাঃ রাশেদা বেগমের কন্যা মোছাঃ সাদিয়া খাতুন রহিমার দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টায় তার গাড়াখোলা গ্রামস্থ বাড়িতে এনামুল মহলদার ও আব্দুল্লাহ বিশ্বাসসহ স্বশস্ত্র ৪/৫ দূর্বৃত্ত প্রবেশ করে। তার ৬ বছর বয়সের শিশু পুত্রের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে পরিবারের সকলকে জিম্মী করে নগদ ৫৫হাজার টাকা, স্বর্ণের ২টি চেইন, ১টি আংটি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার স্বামী সানোয়ার হোসেনকেও বেধড়ক মারপীট করে। থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে সেটি এজাহার হিসেবে গন্য করা হয়নি। এনামুল মহলদার গং দীর্ঘদিন ধরে বিল ডাকাতিয়ার ঘেরের পাড়ে ও নার্সারী বাগানে অবস্থান করে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও হেরোইনের ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। তবে তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না বলে সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এ সময় তাদের নির্যাতনের শিকার সাদিয়া খাতুন রহিমা (২৯) ও ফাতেমা বেগম (৪৫) ও শাহীন মোড়ল (৪৫) উপস্থিত ছিলেন। তারা অবিলম্বে এ সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। প্রসঙ্গতঃ খুলনার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত জিআর ৬৩/২০০৯ মামলায় এনামুল মহলদারকে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ ও ১হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, এনামুল মহলদার বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।