রিংটন মন্ডল, খুলনা অফিসঃ মাদ্রাসার ছোট হুজুরকে না বলে বাড়ি যাওয়ার অপরাধে মোঃ ইয়াছিন হাওলাদার (১০) নামে শিশু শিক্ষার্থীকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে জোড়া বেত দিয়ে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে শিক্ষক সেলিম শেখ (৪৫) । এ ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফুলতলার মুক্তিশ্বরীস্থ হযরত বুড়ো ফকিরিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। বেত্রাঘাতে যন্ত্রণাকাতর ঐ শিশু ইয়াছিনকে রাত ১টায় ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়লেও বর্বর শিক্ষক সেলিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
হাসপাতাল বেডে যন্ত্রণাকাতর ইয়াছিন জানায়, সে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিওলধারা গ্রামের জনৈক ইদ্রিস হাওলাদারের পুত্র। স্থানীয় একটি প্রাইমারী স্কুলে ইয়াছিন ৫ম শ্রেণীতে পড়ত । গত মঙ্গলবার তাকে এ মাদ্রাসায় এনে নজেরা শাখায় ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার সকালে বড় হুজুরের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে সে পার্শ্ববর্তী খালা বাড়িতে যায়। সন্ধ্যার পর ফের মাদ্রাসায় আসলে ছোট হুজুর সেলিম শেখ তাকে ধরে নিয়ে রুমের ভিতর আটকিয়ে রেখে দু’হাত বেঁধে জোড়া বেত দিয়ে বেধরক পিটাতে থাকে। এ তার পিট, বুক, দু’ উরু সহ সারা শরীর মারাত্মক জখমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় সুচতুর সেলিম তাকে গাড়াখোলা উত্তরপাড়ায় তার খালু কালাম শেখের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায। খবর পেয়ে ইয়াছিনের পিতা ইদ্রিস হাওলাদার তাকে ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করেন। এ ব্যাপারে মুক্তিশ্বরীস্থ হযরত বুড়ো ফকিরিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আঃ জলিল ছোট হুজুর কর্তৃক প্রহরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ইয়াছিন মাদ্রাসায় এখনও ভর্তি হয়ে পারিনি। ঘটনার সময় সে অন্য শিক্ষার্থীদের জুতা চুরি করতে আসায় সেলিম হুজুর তাকে পিটিয়েছে মাত্র । মাদ্রাসা সংলগ্ন মাজারের খাদেম হাসান শেখ (৭০) সেলিম হুজুর কর্তৃক শিশু ইয়াছিনকে বেধরক মারপিট করছে তবে কারণ জানা নাই। অপরদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইব্রাহিম গাজী জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় ঐ প্রতিষ্ঠান সভাপতি শেখ রওশন আলী আমন্ত্রনে মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। এ সময় মাদ্রাসায় ভর্তি কালাম শেখের দুই পুত্র , ইয়াছিন এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এ দিকে শিশু ছাত্র নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং ছোট হুজুর সেলিমের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী।