ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি// ফুলতলা সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে চুরি করে চাল বিক্রির ঘটনায় দুই লেবার কারাগারে গেলেও মূল হোতারা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা এর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেন। এ সময় খাদ্য গুদামে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পৃথকভাবে সাক্ষ্য গ্রহন করেন।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের নির্দেশে গত মঙ্গলবার সকালে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ফুলতলা সদর ইউনিয়নে সরকারি কর্মসূচির আওতায় ৫১২ বস্তা ভিজিডি চাল বের করার সময় রহস্যজনকভাবে গুদাম শ্রমিকেরা অতিরিক্ত ২ মেট্্িরক টন চাল চুরি করে বিক্রির জন্য বের করা হয়। পরে চুরিকৃত ওই চাল অভয়নগরে বিক্রির নেয়ার সময় যুগ্নিপাশা এলাকায় জনতার হাতে আটকের পর পুলিশ সেটি জব্দ এবং মামলা করে। ওই মামলায় নসিমন চালক শহিদুল জমাদ্দার, গুদাম শ্রমিক আইয়ুব আলী এবং অভয়নগরের চাল ব্যবসায়ী আল আমিনকে আসামি করে মামলা হয়। এদের মধ্যে শহিদুল ও আইয়ুব আলীকে আটক, আদালতের জবানবান্দ শেষে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। তবে চাল পাচারের নির্দেশদাতা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের নামে এখনও মামলা হয়নি এবং তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়াতে। এদিকে খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বাবুল হোসেন বলেন, গুদামের চাল চুরি ঘটনা জানতে পেওে তিনি জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মোঃ নোমান এবং ফুলতলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মিজানুর রহমান। তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছে । তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে প্রথম দিনের তদন্ত শেষে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয় গতকাল সকালে খাদ্য গুদাম পরিদর্শন, খামাল ও ষ্টক লেজার মিলানো হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ জাকারিয়া, মোজাম্মেল হক, আমিনুল ইসলাম, এবং শ্রমিক সরদার আঃ মান্নানের লিখিত সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। খাদ্য গুদামের নিরাপত্তায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরায় আট ভ্যানযোগে ভিজিডির ৫১২ বস্তা চালের সাথে এক নসিমনে প্লাষ্টিকের বস্তায় ৪০ বস্তা চাল গুদাম থেকে বের হতে দেখা যায়। তবে বিষয়টি তদন্তধীন বিধায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পূর্বে এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মিজানুর রহমান।
খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ছাড়া একদানা শস্য লোড বা আনলোড হয় না বলে জানালেন ফুলতলা সরকারি খাদ্য গুদামে কর্মরত শ্রমিকেরা। তারই নির্দেশনায় ওই দিন ৫১২ বস্তা ভিজিডির সাথে সরকারি চাল অতিরিক্ত ২ মেট্্িরক টন চাল গুদাম থেকে বের করা হয়। অপরদিকে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, এক হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার খাদ্য গুদাম এখন তিন হাজার মেট্রিক টন গুদামে রুপান্তরিত হয়েছে, ফলে চাপ একটু বেশি। তাছাড়া বিষয়টি যেহেতু এখন তদন্তধীন। সেহেতু এ বিষয়ে এখন মন্তব্য করা যাবে না।