তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// খুলনার ফুলতলা সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ২ হাজার কেজি চাল চুরি করে বিক্রি করার ঘটনায় গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসানকে প্রত্যাহার করে মহেশ^রপাশা খাদ্য গুদামে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার স্থলে রাশেদ আহমেদ আল রিপনকে ফুলতলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পন করা হয়। তবে মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টে তাকে দায়ি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হলেও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দাবি আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ নভেম্বর ফুলতলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসানের নির্দেশে ২ হাজার কেজি চাল চুরি করে বিক্রির পর নওয়াপাড়ায় ক্রেতা আল আমিনের গুদামে পৌছাতে গিয়ে যুগ্নিপাশা এলাকায় চাল ভর্তি নছিমনসহ চালক শহিদুল জমাদ্দার আটক হয়। খবর পেয়ে ফুলতলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নছিমনসহ চাল জব্দ ও নছিমন চালক শহিদুলকে আটক করে। পরে এসআই জাকির সিকদার বাদি হয়ে নছিমন চালক শহিদুল জমাদ্দার, গুদাম শ্রমিক আয়ুবআলী ও নওয়াপাড়ার চাল ব্যবসায়ী আল আমিনসহ অজ্ঞাত আরও ৩ /৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বাবুল হোসেনের নির্দেশে জেলা সহকারী খাদ্য কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান এবং কারিগরি পরিদর্শক মোঃ নোমান ও ফুলতলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মিজানুর রহমানকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। একই সাথে ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিনের নির্দেশে ফুলতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিনকে প্রধান করে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মিজানুর রহমান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামকে সদস্য করে পৃথক আরেকটি কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটির উপস্থিত খাদ্য গুদামের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চাল চুরি ঘটনাটি নিশ্চিত হন। উভয় কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসান, নিরাপত্তা কর্মী আমিনুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন, জাকারিয়া ও শ্রমিক সরদার আব্দুল মান্নান এর সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনে মহাপরিচালকের নিকট সুপারিশ করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বাবুল হোসেন জানান, ফুলতলা খাদ্য গুদাম থেকে ২ হাজার কেজি চাল চুরি করে বিক্রি করার ঘটনাটি সত্য। তবে খাদ্য গুদামের খামাল অনুযায়ী মজুদ ঠিক ছিল। কিন্তু চুরি করে বিক্রিকৃত চালের উৎস সম্পর্কে সঠিক জনাব দিতে পারেনি। সে কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার জন্য মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রনালয়ের আদেশ পেলেই আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।