বরগুনায় রিফাত হত্যাকান্ডের মূল হোতারা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী

প্রকাশঃ ২০১৯-০৬-২৮ - ২০:৪২

ঢাকা অফিস : বরগুনায় প্রকাশ্যে নৃশংস হত্যাকান্ডের মূল হোতারা স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং সন্ত্রাসী। ক্ষমতাসীন দলের একটি অংশের ছত্রছায়াতেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যেত বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার। আসামিরা স্থানীয় সংসদ সদস্যের পুত্র এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুসারী বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে দুজনেই দুষছেন একে অপরকে।

রিফাত হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত মূল হোতা নয়ন বন্ড পুলিশের খাতায় একাধিক মাদক মামলার আসামি। একসময় ছাত্রদল করলেও ক্ষমতা পরিবর্তনের সাথে সাথে ঠাঁই নেয় ছাত্রলীগের ব্যানারে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর একমাত্র পুত্র সুনাম দেবনাথের সঙ্গে নয়ন বন্ডের সুসম্পর্ক রয়েছে।

বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, নয়ন সবসময়ই এমপি পুত্রের ছত্রছায়ায় ছিল। রিফাতেরও এমপি পুত্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু বছর খানেক আগে সে তার সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখে নি।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মৃধা বলেন, এসব সন্ত্রাসীরা যাতে দলের কোন দায়িত্ব না পায়, মনোনয়ন না পায়, দল থেকে কোন সহায়তা না পায়, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। তা না হলে এই সরকারের সব অর্জন ম্লান হয়ে যাবে।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তাদের সবার নামেই আট থেকে দশটা করে মামলা রয়েছে। একটু খোঁজ নিলেই জানা যাবে কারা তাদের জামিনের ব্যবস্থা করে, অর্থের যোগান দেয়, কাদের সঙ্গে আড্ডা দেয়। এগুলোর খোঁজ নিলেই কিন্তু সব বেড়িয়ে যাবে।

তবে সন্ত্রাসীদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই জানিয়ে এমপিপুত্রের দাবি, মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামি দুই ভাই রিফাত-রিশান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আত্মীয়। নানা অপকর্ম করে তারাই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এমপিপুত্র সুনাম দেবনাথ বলেন, এরা আমাদের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ভায়রার ছেলে। তারা ছোট ছোট অপরাধ অনেক আগে থেকেই করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে যারাই অভিযোগ করতে গেছে তারাই অপদস্ত হয়েছে।

অভিযুক্ত নয়ন, রিফাত, রিশানসহ এজাহারভুক্ত আসামিরা ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে মাদকসহ নানা অপকর্ম করে বলে অভিযোগ আওয়ামীলীগের নেতাদের। প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের ভুমিকা নিয়েও।

বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের উপরে কোন চাপ নেই। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন আমরা কাউকেই ছাড় দিব না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থাই করবো।

এলাকাবাসী বলছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে যাদের যাদের দেখা গেছে তাদের মধ্যেও কেউ হয়তো হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। পাশাপাশি সন্ত্রাসের মদদদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি তাদের।