ঢাকা অফিস : জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা-ইউনেস্কো, বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত ৬টি স্থানকে নতুন করে বিপদাপন্ন জায়গা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তালিকার প্রথমেই রয়েছে বাংলাদেশের সুন্দরবন। এতে করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনটির বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ পড়ার শংকা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলছে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম সম্মেলন।
সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হয়। তবে শংকার বিষয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বনসহ ৬টি স্থানকে বিভিন্ন কারণে সম্প্রতি বিপদাপন্ন তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যোগ দিয়েছে। বিপদাপন্ন তালিকা থেকে সুন্দরবনের নাম সরাতে তারা কমিটিকে বোঝাতে সক্ষম হলে, ইউনেস্কো বিপদাপন্ন তালিকা থেকে সুন্দরবনের নাম প্রত্যাহার করতে পারে।
এ ব্যাপারে পরিবেশবিদ ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘হয়তো বাংলাদেশ সরকার বলবে আমরা এ কাজটি করছি, তারা দেখতে চাইবে আমরা এই কাজটি কি পদ্ধতিতে করছি, এর মেথেডোলোজিতে তারা স্যাটিসফাইড হতে চাইবে। এবং, এটা করা হলো কিনা এটা একটা নিউট্রাল টিম দেখবে, সে ব্যবস্থাপনা সরকারকে করতে হবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আছে, খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি আছে তারা এইক্ষেত্রে কাজ করতে পারে।’
বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, সুন্দরবনের চারপাশে শিল্পকারখানার অনুমোদন ও কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বলছে, বাংলাদেশ সরকার সুন্দরবন রক্ষায় যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. আবদুল মতিন জানান, ‘ডেনজার লিস্টে গেলে জাতিসংঘের সরাসরি সংপৃক্ততা চলে আসে। জাতিসংঘের তখন একটা দায়িত্ব হয়, কি করে সরকারকে ম্যানেজ করবে। নানামুখী কথা হবে এরকম যে, ডেনজার লিস্টে নাম দেয়া হয়েছে, এই লিস্টের বাইরে নাম আসতে হলে কি করতে হবে।’
বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিকে বোঝাতে বাংলাদেশ সফল হলেই হবে না। এর বাস্তবায়নও ঘটাতে হবে, যা বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি পর্যবেক্ষণ করবে। বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে আবারো সুন্দরবন চলে যাবে বিপদাপন্ন তালিকায়।
গত বছর, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর বেলিজ ব্যারিয়ার রিফকে বিপদাপন্ন জায়গার তালিকা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।