ঢাকা অফিস : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট পাঠানো হয়।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, মামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছেন ডিবি। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৬ জন ও এজাহারের বাইরে ৫ জন। বাকি চারজন পলাতক। মনিরুল ইসলাম আরো জানান, চার্জশিট আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, আবরার হত্যা সরাসরি অংশে নেয় ১১ জন। বাকি ১৪ জন হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার তদন্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগের নেতাসহ বুয়েটের ২৫ ছাত্রের সম্পৃক্ততা পান তদন্ত কর্মকর্তারা। তাদের সবাইকেই চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে। সাক্ষী হয়েছেন ৩০ জন।
তিনি বলেন, আসামীরা র্যাগিং ও উশৃঙ্খল আচরণসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিল। সিসিটিভি’র ফুটেজ দেখে ও বিভিন্ন আলামত থেকে চার্জশীট প্রস্তুত করা হয়েছে। ঘটনায় হল প্রশাসন ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মনিরুল ইসলাম।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অমিত সাহা, মাজেদুল ইসলাম, মো. মুজাহিদুল, মো. তানভীর আহমেদ, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. জিসান, মো. আকাশ, শামীম বিল্লাহ, মো. সাদাত, মো. তানিম, মো. মোর্শেদ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, এস এম মাহমুদ সেতু প্রমুখ। তাদের মধ্যে মুন্না, অমিত সাহা, মিজান, রাফাত ও সেতুর নাম এজাহারে ছিল না। আসামিদের মধ্যে রাসেল ছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক, ফুয়াদ সহসভাপতি, অনিক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, রবিন সাংগঠনিক সম্পাদক, সকাল উপসমাজসেবা সম্পাদক, মনির সাহিত্য সম্পাদক, জিয়ন ক্রীড়া সম্পাদক, রাফিদ উপদপ্তর সম্পাদক, অমিত সাহা উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং তানিম, মুজাহিদুর ও জেমি সদস্য। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামি মো. জিসান, মোর্শেদ ও এহতেশামুল তানিম এখনো পলাতক।
এ মামলায় এজাহারভুক্ত আট জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন—নাজমুস সাদাত, ইফতি মোশাররফ, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর ও মনিরুজ্জামান মনির।
গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে (২১)। পরদিন ৭ অক্টোবর আবরার হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলনে নামেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। একই দিনের দুপুরে দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’