প্রতিনিধি বেনাপোল : বেনাপোল স্থলবন্দরের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু‘দল শ্রমিকের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ , বোমা বিষ্ফোরণ, ভাংচুর অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ২ শ্রমিক মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বন্দর এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকে বন্দরের অভ্যন্তরে লোড-আনলোড সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
পোর্ট সূত্রে জান াযায়, ক্ষমতাসীন দলের এমপি এবং মেয়র পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরের শ্রমিকদের দু‘টি গ্রুপকে নিয়ন্ত্রন করে আসছে। গত ডিসেম্বরে বন্দরের হ্যান্ডলিং ঠিকাদারি কাজ পায় ঢাকার ড্রপ কমিনিকেশন নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এমপি পক্ষের শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর জেলা পরিশদের সদস্য অহেদুজ্জানকে শ্রমিক পরিচালনার দায়িপ্ত দেয়। কিন্তুু মেয়র পক্ষের পৌর কাউন্সিলর রাশেদ আলী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িপ্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ইউনিয়ন অফিসটি তার দখলে রাখে। নব্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অহিদ কে শ্রমিক অফিসে ঢুকতে বাধাদিয়ে আসছে। অহিদ শ্রমিকদের একাংশকে সাথে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ৯২৫ নং শ্রমিক অফিসে হামলা চালায়। এসময় সাজে ও আলাউদ্দিন নামে মেয়র গ্রুপের ২জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তার কিছু সময় পর মেয়র গ্রুপের এক দল সন্ত্রাসী শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান ও যুবলীগের সভাপতি অহেদুজ্জামানের বাড়িতে কয়েকটি বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। পবে শ্রমিকরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ওহিদুজ্জামান কে সাথে নিয়ে মিছিল করতে করতে শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস দখলে নেয় এবং মেয়র গ্রুপের শ্রমিকরা বন্দর এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় মুহুর্তের মধ্যে বন্দর এলাকায় সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের বোমা বিষ্ফোরনের ঘটনায় শান্ত বেনাপোল অশান্ত হয়ে পড়ে।
বেনাপোল বন্দরের ৯২৫ নং হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক (মেয়র গ্রুপ) রাশেদ আলী জানান, ড্রপ কমিনিকেশন নামের ঠিকাদার বন্দরের হ্যান্ডলিং ঠিকাদারি দায়িত্ব পাওয়ার পর শ্রমিকদের ইউনিয়ন দখল করার চেস্টা করে আসছে। সকালে কোন কিছু বোঝার আগেই ঠিকাদারের লোকজনেরা শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস ভাংচুর করে দখলে নেই।
বেনাপোল বন্দরের ৮৯১ নং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলিম উদ্দিন কলি জানান, ৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের মজুরী বেশ কিছু বহিরাগতদের ভাগ দিয়ে আসছিল। ফলে প্রকৃত মজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল সাধারন শ্রমিকরা।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ অপূর্ব হাসান জানান, বেতন না পাওয়ায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকরা অসন্তষ্ঠ ছিল। এজন্য সকালে শ্রমিকরা মিছিল করে। এক পর্যায় শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায় পড়ে। পুলিশের হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের সেই উত্তেজনা প্রশরিত হয়েছে। বন্দর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা আছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্দরে শ্রমিকদের দু‘গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সকালের দিকে কিছু পণ্য লোড হয়েছে। বন্দরের নিরাপত্তার জন্য আনসার, আর্মড পুলিশ, নিরাপত্তা প্রহরীরা কঠর অবস্থানে আছে। শ্রমিকদের এসংঘর্ষের ঘটনা উপরিমহলকে জানানো হয়েছে।