রাবি প্রতিনিধি : মদপানে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের রাশিয়ান একজন প্রকৌশলীসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করে পুলিশ জানিয়েছে মদে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরো দুই রাশিয়ানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহীর সিডিএমএ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত রাশিয়ান হলেন রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রকৌশলী বেলি দিমেত্রি (৪১)। অসুস্থ রাশিয়ান অন্য দুই নাগরিক হলেন মিশা (৪০) ও লেবা (৪৫)।
ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘ওই তিন রাশিয়ান নাগরিক পাবনার ঈশ্বরদীতে মদ পান করেন। শনিবার গভীর রাতে তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের রাশিয়ান প্রকৌশলী বেলি দিমেত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা। আর বাকী দুজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এখনো।’
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী শনিবার রাতে মদপান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক শিক্ষার্থীকেও অসুস্থ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তার নাম ও বিভাগ পরিচয় জানা যায়নি।
রাবির নিহতরা হলেন আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও দৌলতপুর থানার কবির আলম খানের ছেলে মুহতাসিম রাফিদ খান এবং অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও ডেমরারর ছোট রাউতরা গ্রামের পুনেন্দ্র রায়ের ছেলে তুর্য রায়।
এদের মধ্যে মুহতাসিম ছালছাবিল মেসে ও তুর্য সাইদ টাওয়ারের মেসে থাকতেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির।
সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আরেকজন অসুস্থ রুয়েট শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, তারা তিন জনে এক জায়গায় বসে মদ জাতীয় কিছু একটা পান করে। পরে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে মেসের অন্য সদস্যরা তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
নিহতদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই সহকারী প্রক্টর।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘রাবির দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারণ তারা দুজনে পৃথক মেসে থাকতো। তারা একত্রে মাদক নিয়েছে নাকি এর সঙ্গে অন্য কোন বিষয় জড়িত আছে এটি তদন্তের বিষয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাশিয়ান নাগরিকটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে তারা এ্যালকোহল সেবন করেছিলেন। তিন জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন ও দুই জন এখনো রাজশাহীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। আরএমপির তরফ থেকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
মদে কোনো বিষাক্ত পদার্থ ছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মদে কোনো বিষাক্ত পদার্থ থাকতে পারে। তবে চূড়ান্তভাবে চিকিৎসকরা ময়না তদন্ত শেষে বলতে পারবেন আসলে ঘটনাটি কী।’