ঢাকা অফিস : শুধুমাত্র ওষুধ ছিটিয়েই কি মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব? ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ প্রাণঘাতি বিভিন্ন ভাইরাস বহনকারী মশা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন প্রাকৃতিক ভারসাম্য। পাশাপাশি পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমেই মশা বাহিত এইসব ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পারে মানুষ।
যে কোনো বিপর্যয় রুখতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। মশা ও মশা বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।
তিনি জানান, বাস্তুসংস্থানের প্রত্যেকটা জীব একটি আরেকটির উপর নির্ভরশীল। তাই প্রাকৃতিকভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ খুবই দরকার। আর বাস্তুসংস্থানের মাধ্যমেই এই মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মশা বা পোকা জাতীয় কীট যেসব প্রাণি খায় সেসব প্রাণির পরিমাণ কমে গেছে অনেক। সে কারণেই বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা বাহিত ভাইরাস। মশা নিয়ন্ত্রণে পরিবেশত ও জৈবিক বিষয়সহ সমন্বিত পদ্ধতি প্রয়োগ প্রয়োজন।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ১২৩ প্রকারের মশা আছে। একেকটি মশার জন্মস্থান একেক জায়গায়। প্রত্যেকটা মশার ক্ষেত্রে তাদের জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ভিন্ন। এনোফোলিস নামক এক ধরণের মশা আছে, এরা সাধারণত ধান ক্ষেত বা আশে পাশে কোথাও পানি জমা থাকলে সেখানে জন্মে।এসব জায়গায় ব্যাঙ বা ছোট মাছ থাকলে তারা এই মশা খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে এটি নিয়ন্ত্রণ করে। এডিশ মশার ক্ষেত্রে ছোট এক ধরণের পোকা আছে (সাইক্রোপস) এবং ব্যাকটেরিয়া আছে যারা এডিশ মশা খেয়ে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় গাপ্পি মাছ খুব অল্প ছাড়া হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, এডিশ মশা যেখানে হয় সেসব জায়গায় যাতে পানি জমা হয়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া ড্রেন, ডোবা বা নর্দমা পঁচে যাচ্ছে সেগুলো যাতে পঁচে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রাকৃতিকভাবে মশা নিয়ন্ত্রণে গাপ্পি মাছ অনেক কার্যকর। গাপ্পি মাছ যদি বাংলাদেশে হ্যাচারি করে চাষ করে, ড্রেন বা ডোবাতে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলেও মশা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।