আবু হোসাইন সুমন, মোংলা : মোংলার সুন্দরবনের বৈদ্যমারী এলাকায় বাঘের আক্রমনে একটি গাভী ও গাভীর পেটের বাচ্চা মারা গেছে। বাঘ গরুটির পিছনের অংশ থেকে প্রায় ১০/১২ কেজি মাংস খেয়ে ফেলার পর বেরিয়ে আসে পেটে থাকা বাচ্চার দুইটি পা। মাংস খেয়ে বাঘটি বনের গহীনে চলে যাওয়ার পর বন বিভাগের সহায়তায় স্থানীয় লোকজন গরুটিকে উদ্ধার করে মাটি চাপা দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, মোংলার চিলা ইউনিয়নের বৈদ্যমারী গ্রামের মমিন উদ্দিন মুন্সীর গোয়ালের এ গরুটি বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ী সংলগ্ন খড়মা নদী (মৃত খাল) পার হয়ে সুন্দরবনের পাড়ে/ওপারে গেলেই একটি বাঘ গরুটির উপর আক্রমন করে মেরে ফেলে। লোকজনের দৃষ্টিতে আসার আগেই গরুর পিছনের দুই পায়ের উপরের অংশের মাংস খেয়ে ফেলে রেখে বাঘটি বনের ভিতরে চলে যায়। এরপর মৃত গরুটিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। গরুর মালিক মমিন উদ্দিন মুন্সী বলেন, বাঘ গরু মেরে পিছনের দিক থেকে খেয়ে ফেলেছে। বাঘের খাওয়া স্থান থেকে গরুর পেটে থাকা বাচ্চার দুইটি পা বেরিয়ে এসেছে। বাঘের আক্রমণে আমার গরু ও বাচ্চা উভয় হারাতে হয়েছে। এদিকে সুন্দরবনে গবাদি পশুর অনাধিকার প্রবেশ, গোচারণ করায় ও বাঘের আক্রমনে গরু মারা যাওয়ার ঘটনায় গরু মালিকের বিরুদ্ধে গোচারণ বন মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। পূর্ব সুন্দরবনের চাদপাই ষ্টেশন অফিসার মো: কামরুল হাসান বলেন, সুন্দরবনে অনাধিকার গরু প্রবেশ করিয়ে গোচারণ করানোর অভিযোগ গরুর মালিকের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভবিষ্যৎতে যাতে কারো গবাদি পশু বনে প্রবেশ না করে সেজন্য সকলকে সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে বাঘের আনাগোনা বৈদ্যমারী এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে বনের আশপাশের লোকজনকে সচেতনমুলক ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বাঘের আনাগোনাটা একটা ভাল দিক। কারণ বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিই এর লক্ষণ। সুতরাং বাঘ আমাদের প্রয়োজন আছে, বাঘের এবং সাধারণ মানুষের জানমালের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচেষ্ট রয়েছে। এর আগে বুধবার বিকেলে একই এলাকায় বাঘের তাড়া খেয়ে একটি মায়াবী হরিণ লোকালয়ে চলে আসার পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেটিকে উদ্ধার করে পুনরায় বনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।