আবু হোসাইন সুমন, মোংলা : ভূয়া কোটা ও সার্টিফিকেট দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চাকরী নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগের হেড মেকানিকস মো: শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শহীদুল প্রতারণা করে শুধু চাকরিই নেয়নি, একাধিক বিয়েও করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক ও তড়িৎ) লে: কর্ণেল মিজানুর রহমান শাহ চৌধুরী বলেন, শহীদুলের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ইতিমধ্যে তার নজরে এসেছে। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনে সালিশ-বৈঠক চলে আসছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, মোংলা বন্দরে হেড মেকানিকস পদে কর্মরত মো: শহীদুল ইসলামের বাড়ী মুলত বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার উপজেলার নলিচন্দ্রখালী গ্রামে। মুল ঠিকানা গোপন করে তিনি চাকরি নিয়েছেন খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার কোটায়। কুষ্টিয়া জেলায় শহীদুলের কোন বসত-বাড়ী নাই, নাই কোন আত্মীয়-স্বজনও। শুধু কোটা চুরি করেই শহীদুল মোংলা বন্দরে চাকুরি নেয়নি, চাকরিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদও তার নিজের নয় জালিয়াতির মাধ্যমে তার আপন ভাই রফিকুল ইসলাম রুবেল সার্টিফিকেট দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ভূয়া কোটা ও সার্টিফিকেটে চাকুরি নেয়া শহীদুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন বন্দরের যান্ত্রিক ও তড়িৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, কোটা ও মেধা তালিকা অনুযায়ী চাকরী পাওয়া যেখানে খুব কঠিন সেখানে কিভাবে ভূয়া কোটায় ও সার্টিফিকেটে চাকরী হয় এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা আশা করছি বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান একেএম ফারুক হাসান ও প্রধান প্রকৌশলী লে: কর্ণেল মিজানুর রহমান শাহ চৌধুরী শহীদুলের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এদিকে প্রতারণা করে চাকরী নিয়েই শহীদুল থেমে নেই। প্রতারণা করে এ পর্যন্ত দুই দ্ইুটি বিয়েও করেছেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর পরিচয় গোপন করে শহীদুল মোংলার দিগরাজে আরো একটি বিয়ে করেছেন। এরপর প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স করলে প্রথম স্ত্রী শহীদুলের বিরুদ্ধে বরগুনার পাথরঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা শহীদুল নিয়মিত কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। এদিকে দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে জমি ও বাড়ী ক্রয়সহ বিভিন্ন অযুহাতে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শহীদুল। এখন দ্বিতীয় স্ত্রীর পিতার (শ্বশুরের) নামে থাকা দুইটি বাড়ীর মধ্যে একটি বাড়ী শহীদুলের নামে লিখে না দিলে এ স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি-ধামকি দেয়ার পাশাপাশি নির্যাতন করে চলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে শহীদুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য নয়। তবে মুল বাড়ী মঠবাড়ীয় হলেও কুষ্টিয়া কোটায় চাকুরি নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। এছাড়া প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে বলেন, ওটা নিয়ে মামলা চলছে। আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথেও তার সম্পর্ক ভাল নেই বলে জানান তিনি।