মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ মোল্লাহাটে হত্যা মামলা রুজুর তিন মাস অতিবাহিত হলেও কেউ আটক না হওয়ায় এবং আসামীদের হুমকীতে বাদী ও তার সজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হত্যা ও হুমকীর ওই ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্থ অসহায় বাদী পক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থক্ষেপ প্রার্থনা করছে।
মামলার বাদী লক্ষী রানী রায় জানান, ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা গ্রামে তাদের বাড়ি হলেও মোল্লাহাটের উত্তরমাটিয়ারগাতী এলাকায় তাদের মৎস্য ঘের এবং সেখানে পাহারা ও বসবাসের জন্য ঘর রয়েছে। ঘটনার পূর্বে আসামী ফয়সাল ও মিথুন বৈরাগীসহ আরো তিন আসামী তাদের বাড়িতে এসে তার স্বামী বঙ্কিম রায়ের কাছে ঘেরের ঘরের চাবী চায় টাকার বিনিময়ে তাস (জুয়ার আসর) বসানোর জন্য। বঙ্কিম রায় তাদেরকে চাবি না দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরে যায়। ঘটনারদিন ২৮/১১/২০ ইং সন্ধা অনুমান ৭টার দিকে মাছের খাবার নিয়ে ঘেরের দিকে রওনা হয়ে যায় তার স্বামী। এরপর রাত অনুমান ১০টার দিকে আসামী মিথুন বৈরাগী তাদের ছেলে কলেজ ছাত্র জয় রায়ের মোবাইলে জানায়, উত্তর মাটিয়ারগাতী জনৈক ধীরেন মন্ডলের ঘেরে তোমার বাবা পড়ে আছে। ওই খবরে তারা দ্রুত ছুটে যায় এবং বঙ্কিম রায়কে উদ্ধার করে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান বঙ্কিম রায়ের মৃত্যু হয়েছে। এরপর তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হলে গত ০৩/০৩/ ২০ তারিখে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট থানায় মামলা করা হয়। যার নং-০২, ধারা ৩০৩/৩৪। ওই মামলার আসামী পক্ষ বিভিন্নভাবে বাদী পক্ষকে হুমকী দিচ্ছে মামলা প্রত্যাহারের জন্য।
নিহত বঙ্কিম রায়ের বড় ভাইয়ের স্ত্রী সঞ্জিতা রায় জানান, তার দেবর বঙ্কিমের নিকট ত্রিশ হাজার টাকা (চাদা) দাবী করছিলো আসামী ফয়সাল। ওই টাকা না দেওয়ায় আমার দেবরকে হত্যা করে ফয়সাল। ওই মামলা করার পর ফয়সালের বোন সাবিনা আমাদেরকে হুমকী দিচ্ছে মামলা প্রত্যাহার করতে। অন্যথায় আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করাসহ আমাদেরকে অনেক সমাস্যা করবে। ওই হত্যার সাথে ফয়সালের স্ত্রী জড়িত বলেও জানান তিনি।
আসামী ফয়সালের বোন সাবিনা বলেন, বঙ্কে (বঙ্কিম রায়) তার ঘেরের ঘরে জুয়ার আসর বসাতো, তাছাড়া সে পাখি শিকার করে বিক্রি করতো, ঘটনারকালে পুলিশ/পুলিশ সেজে কেউ ধাওয়া করছিলো, তখন দৌড়ানো অবস্থায় পড়ে যায় বঙ্কে, শোড়গোলের মাধ্যমে ওই খবর শুনে তিনি দেখতে যান এবং শীতে ঠান্ডার কারনে বঙ্কে’র গায়ে শরিষার তৈল মাখেন তিনি। এছাড়া তার ছোটভাই আসামী ফয়সাল ওই দিন বাড়ি ছিলনা এবং তারা কেউ ঘটনার সাথে জড়িত নাই বলেও জানান সাবিনা।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জগন্নাথ চন্দ্র বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব এবং ঘটনা স্থলের লোকজন মূখ খুলতে না চাওয়ায় তেমন কোন অগ্রগতি হয় নাই। তবে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখবেন বলেও জানান তিনি।