ইউনিক প্রতিবেদক :
ভ্যাপসা গরমে সারাদিন সিয়াম সাধনার পর শারীরিক ক্লান্তি দূর করে একটু প্রশান্তির জন্য ইফতারে রসালো ফলের স্বাদ নিতে অধিকাংশ মানুষই কিনছেন তরমুজ। তাইতো রোজার প্রথম দিন থেকেই নগরীর তরমুজ বাজারে ক্রেতার বেশ চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিক্রেতারা দামও বেশি হাকাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ।
প্রথম রমজানের দিনেই নগরীর বেশকিছু এলাকার ফলের দোকান যেমন রূপসা, ময়লাপোতা মোড়, চিত্রালী, সোনাডাঙ্গা, বৈখালী, বয়রা, দৌলতপুর, ডাক বাংলা, কে ডি এ ঘোষ রোড, নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা যায় ছোট-বড়, বাংলালিংক, চায়না-২, এশিয়ান-২, জাপানি কাল জাতসহ বিভিন্ন আকার ও জাতের তরমুজ। দুপুর থেকেই দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে তরমুজের দাম কসাকসির দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্রেতারা তাদের সাধ্যমত আকারের তরমুজ কিনছেন। এতেই তাদের মধ্যে এক ধরণের তৃপ্তির আভাস লক্ষ্য করা যায়।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজানে তরমুজের চাহিদা বাড়বে জেনে দোকানিরা ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়াচ্ছে। সপ্তাহ দেড়েক আগেই বড় তরমুজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছিল ৪০ টাকায় আর ছোট তরমুজগুলো বিক্রি হচ্ছিল ৩০ টাকায়। এখন এসব তরমুজই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে।
তরমুজ ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, মার্চের শুরুতে বাজারে তরমুজ উঠলেও সেসময় নগরবাসীর মধ্যে তেমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু আজ রমজানের প্রথম দিনে এর চাহিদা বেড়ে দু-তিনগুণে দাড়িয়েছে।ব্যবসায়ীরা আরো জানান, আগে যেখানে দিনে ৪০-৫০টি তরমুজ বিক্রি হতো আজ দিনের অর্ধেক সময়ই দ্বিগুণ বিক্রি হচ্ছে। মূলত এই গরমে দিনশেষে ইফতারে তৃপ্তি পেতে লোকজন তরমুজ কিনছেন বেশি।
খুলনা মহানগরীর সবচেয়ে বড় তরমুজের মোকাম কদমতলা, স্টেশন রোড। এ মোকামের তরমুজ ব্যবসায়ীরা জানান, খুলনার প্রায় সব মোকামেই তরমুজ আসে কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালি থেকে। সাইজে ছোট-বড় হওয়ায় দামে পার্থক্য রয়েছে। ৫ থেকে ১২ কেজি ওজনের তরমুজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় আর অন্যদিকে ৫ কেজি ওজনের চেয়ে কম তরমুজগুলো কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কদমতলা মোকামে তরমুজ কিনতে আসা শাহীনুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা তরমুজের দাম ও স্বাদ নিয়ে চিন্তিত হওয়ায় একটি ছোট তরমুজ নেন। তিনি জানান, আমি একটু দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট আবার এখন তরমুজ কেমন হবে সেটা নিয়েও চিন্তিত তাই আজকে ছোট দেখেই একটি তরমুজ নিলাম।
ক্রেতা ইমরান বলেন শখের বসে চার কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনলেন। তিনি বলেন, রমজানের বলে কথা। ইফতারিতে পরিবারের সবাই যেন তৃপ্তির সাথে খেতে পারে সে হিসেবে একটু বড় দেখেই একটি তরমুজ কিনলাম যদিও দাম দু’দিন আগেও এত বেশি ছিল না।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তরমুজ ব্যবসায়ী কদমতলা মোকামের জুয়েল হাওলাদার জানান, এক দিন আগেও আমরা পাইকারিতে ছোট তরমুজ কিনেছি ১শত পিচ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় যা এখন ২১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আর বড় তরমুজগুলো ১শত পিচ ছিল ২৫০০ টাকা। কিন্তু এখন সেই তরমুজই ৬০০০ টাকা দিয়েও কিনতে হচ্ছে। আমরা যদি আড়ৎ থেকে কম টাকায় পণ্য পাই তাহলে তো আর দাম বৃদ্ধি করতাম না। কিন্তু দাম বেশি পড়লে তো খরচ অনুসারে দাম সামান্য বাড়াতেই হবেই। আমরাও তো ব্যবসা করতে আসছি। খেয়ে পড়ে চলতে হবে। তবে কৃষি পণ্য ও বিপণন থেকে তরমুজের কেজিপ্রতি নির্দিষ্ট মূল্য না থাকায় বিষয়টি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছেনা।