রমজানে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখুন

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-২৩ - ১১:৫৯

পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে আগামীকাল থেকে। বেশ আগে থেকেই বাজারে রমজানের উত্তাপ লেগেছে। এক দফা দাম বেড়েছে শবেবরাতের আগে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, বাজারে সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসেরই প্রচুর মজুদ আছে। এর পরও বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তির দিকে। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘দ্রব্যমূল্য কয়েক গুণ বেড়েছে। আয় কমে যওয়ার কারণে পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে ভোক্তারা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় গতবারের তুলনায় এবার রোজায় ভোগ্য পণ্যের চাহিদা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম থাকবে।’ অন্যদিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় এ বছর ইফতারসামগ্রীর বেচাকেনা কম হচ্ছে। ইফতারে যে পণ্যগুলো না কিনলেই নয় সেগুলোও পরিমাণে কম কিনে চলার চেষ্টা করছে নগরবাসী। আর ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, সরকার এখনই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম টেনে না ধরলে সংকট আরো বাড়বে।

এটা ঠিক যে মধ্যবিত্ত পরিবার আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য করতে পারছে না। ফলে ব্যয়ে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ সংকটে আছে। নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে কমেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। জনজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা, রোজার মাসে এই সংকট আরো বাড়বে। অবশ্য বানিজ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন রমজানে পন্য মজুদ করলে বা পণ্যেমূল্য বাড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অবশ্য আমাদের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কোনো উপলক্ষ্য লাগে না। ধর্মীয় উৎসব এলে তো কথাই নেই। বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হয় না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে দাম বাড়ান বলে অভিযোগ আছে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর এবং অন্যান্য ফলমূলের রোজায় চাহিদা বাড়ে, এমন পণ্যের বাড়তি আমদানি হয়েছে। কিন্তু বাজারে তার প্রভাব নেই।

বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেও সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এ প্রবণতা রোধে সরকারকে মূল ভূমিকা নিতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে। পণ্য যেন ভোক্তাসাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।