তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// ফুলতলা উপজেলার দামোদর পথেরবাজার এলাকায় গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসের সীল ব্যবহার করে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদানের অভিযোগে প্রনব চ্যাটার্জি (৫৩) নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে সরকারি চাকুরির ১১টি ভুয়া নিয়োগপত্র, ৯টি সীল, রাষ্ট্রপতির আদেশনামাসহ প্রতারনা কাজে ব্যবহৃত ষ্ট্যাম্প ও চেক জব্দ করা হয়। সে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালির রামদিয়া এলাকার পুরঞ্জয় চ্যাটার্জির পুত্র।
র্যাব জানায়, ফুলতলা এলাকায় চাকুরি দেওয়ার নামে এক প্রতারক বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাত পৌনে একটায় উপজেলার দামোদর পথেরবাজার এলাকার বাবলু সরদারের ভাড়াটিয়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রনব চ্যাটার্জিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে সরকারি চাকুরির ১১টি ভুয়া নিয়োগপত্র, বিভিন্ন দপ্তরের ৯টি সীল, রাষ্ট্রপতির ৩কপি আদেশনামা, ১টি চেক বই প্রতারনা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ৪টি সুপারিশনামা এবং ১টি ষ্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি ফুলতলা বাজারের দর্জি ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ আলী মুন্সী বাদি হয়ে প্রনব মুখার্জিকে আসামীকে করে শুক্রবার রাতে ফুলতলা থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদি অভয়নগর উপজেলার ধুলগ্রামের মোহাম্মাদ আলী বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমার দোকান থেকে কাপড় বানাতে এসে প্রনবের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে সূত্র ধরে সুযোগে আমার ছেলে লিটনকে খুলনা কৃষি বিশ^ বিশ^বিদ্যালয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে ৬লাখ টাকা হতিয়ে নিয়ে নিয়োগপত্র দেওয়ার ব্যাপারে টালবাহানা করতে থাকে। অনুরূপভাবে ধুলগ্রাম এলাকার আসলাম হোসেনের পুত্র সাকিবের কাছ থেকে ২লাখ ৮৩ হাজার টাকা, ফুলতলা উপজেলার দামোদর ঋষিপাড়া এলাকার নিরোদের ছেলে শুভাংকরের কাছ থেকে ২লাখ ৮৩ হাজার টাকা ও পঠিয়াবন্ধা এলাকার মৃত আলেক খানের পুত্র রিয়াদের কাছ থেকে ২লাখ ৮৩হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলার আরও ২জনের কাছ থেকে ৬লাখ ২১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।এদের সকলকে খুলনা কৃষি বিশ^ বিশ^বিদ্যালয়ে কম্পিউটার অপরারেটর, অফিস সহায়ক ও মালিসহ বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে র্যাব-৬ এর লেঃ কমান্ডার সরোয়ার জানান, সে দীর্ঘদিন সহজ সরল মানুষকে প্রতারিত করে অত্যন্ত সুক্ষতার সাথে চাকুরি দেওয়ার নামে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তার কোন অফিস বা দপ্তর নেই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেই এ প্রতারনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তবে যে সকল দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের ভুয়া নিয়োগপত্র ও সীল ব্যবহার করেছে সে দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের কেউ এ প্রতারনার সাথে জড়িত কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, আসামীকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডাবেদন জাননো হয়েছে।