রিফাত হত্যাকারীদের দেশত্যাগ ঠেকাতে আইজিপিকে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশঃ ২০১৯-০৬-২৭ - ১৭:৫৩

ঢাকা অফিস : বরগুনার রিফাত হত্যাকারীরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে বিষয়ে আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া সব থানায় রেড এলার্ট জারি করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে।

বরগুনায় প্রকাশ্যে রিফাত হত্যাকাণ্ড সমাজের ব্যর্থতার চিত্র বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, ঘটনার সবশেষ তথ্য জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্টে বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আজ বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নজরে আনলে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে, বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তার সবশেষ অবস্থা জানাতে বলেছেন। বরগুনার পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককের সঙ্গে এ বিষয়ে সমন্বয় করতে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পরে, বরগুনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানান, রিফাত হত্যাকাণ্ডে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে যুবককে হত্যার ঘটনার বিষয়ে আদালত বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করল, তার স্ত্রী ছাড়া কোনো লোক এগিয়ে এলো না, এটা সমগ্র জনগণের ব্যর্থতা। সমাজটা আসলে যাচ্ছে কোথায়।’

আদালত আরও বলেন, ‘রাস্তায় প্রকাশ্যে মানুষটাকে হত্যা করা হল কিন্তু তার স্ত্রী ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। সবাই এই ঘটনার ভিডিও করল কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। সবাই দাঁড়িয়ে দেখল কিন্তু প্রতিবাদ করল না। এটা জনগণের ব্যর্থতা। কয়েকজন মানুষ এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা হয়তো সাহস পেত না। হয়ত ভয়েই মানুষ এগিয়ে আসেনি।’

রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাকে খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘দেশের সবাই এই ঘটনায় মর্মাহত।’

এ সময়, আদালত জানতে চান এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি? উপস্থিত আইনজীবী জানান, রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এরপর, আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশারকে সব শেষ তথ্য আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার সকালে, স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে পৌছে দিতে গিয়েছিলেন রিফাত শরীফ। কলেজের গেট পার হতে না হতেই ১০ থেকে ১২ জনের একদল যুবক তাকে পথরোধ করে মারতে মারতে টেনে রাস্তায় নিয়ে আসে। এরপরই নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরায়েজী ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময়, রিফাতে স্ত্রী মিন্নি রিফাতকে বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।। কিন্ত, ততক্ষণে উপুর্যপরি কোপে মারাত্মকভাবে আহত হয় রিফাত।

পরে, গুরুতর আহত অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় সেখান থেকে তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া। সেখানেই রিফাত বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

রিফাত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১২ জন আসামির মধ্যে চন্দন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চন্দন এ মামলার চার নম্বর আসামি।’