ঢাকা অফিস : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক এ তথ্য জানান।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। নুসরাতের অবস্থা ভালো না বলে চিকিৎসক জানান।
এর আগে, অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে দেখতে গতকাল রবিবার রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সরকারের পক্ষ থেকে নুসরাতের জন্য সব কিছু করার আশ্বাস দেন তিনি। সরকার এ ঘটনা গুরুত্বের সাথে দেখছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় ডা. দিপু মনি ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে; যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত বিচার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এর আগে, অগ্নিদগ্ধ নুসরাতে শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন নুসরাত জাহান রাফি। আগুনে পুড়ে গেছে তার শরীরের ৮০ ভাগ। শনিবার বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হলে রবিবার তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় মর্মাহত প্রধানমন্ত্রী এবং তার চিকিৎসার খরচ সরকার দেবে বলে জানিয়েছেন, বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডাক্তার সামন্ত লাল সেন। প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন বলেও জানান ডাক্তার সামন্ত লাল সেন।
এদিকে, মাদরাসা ছাত্রী নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চান স্বজন, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধি। ফেনী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ দোষীদের কঠিন বিচার হোক। সঠিক ব্যবস্থা নিলে আমরা মনে করি এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা গুলি লোপ পাবে।’
ঘটনার পর কোন রকম নোটিশ ছাড়াই বন্ধ রয়েছে ফেনী সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এএসএম সিরাজ উদ-দৌলাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ।
ঘটনাস্থল থেকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার আলামত সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ।
গত ২৭শে মার্চ নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা হয় এবং ওই অধ্যক্ষ এখন কারাগারে রয়েছেন। এরই জেরে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করছে তার পরিবার।