ইউনিক প্রতিবেদক :
বাগেরহাটে সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের চিহ্নিত সন্ত্রাসী হালিম মোড়লের নেতৃত্বে পরিকল্পিত হত্যা চেষ্টাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেছে হামলার স্বীকার ভূক্তভোগীরা। এসময়ে তারা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলারও অভিযোগ করেন। রবিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভূক্তভোগী বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. রায়হান হুসাইন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ও আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আক্তার বিল্লাহ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান, বারুইপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জহির মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফেরদাউস মোড়ল গত ২৫ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহনের জন্য ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের দাওয়াত দিতে ০২টি মোটরসাইকেল যোগে বের হই। কাজ শেষে আমরা রাত সাড়ে ১০টায় ১নং ওয়ার্ডের আড়পাড়া বাজারে আসলে হঠাৎ অন্ধকারে আড়পাড়া গ্রামের আজাহার মোড়লের ছেলে হালিম মোড়লের নেতৃত্বে একই গ্রামের মোস্তাকিন মোড়ল, অনিক মোড়ল, এরশাদ মোড়ল, ইরফান মোড়লসহ আরো অজ্ঞাত নামা ৬/৭ জন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের গতিরোধ করে। তারপর তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের রামদা, লোহার রড, হাতুড়ী, লাঠিসোটাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। সেই সাথে সন্ত্রাসীরা আমাদের ৪টি মোবাইল ফোন ও ০২টি মোটর সাইকেলের ব্যাপক ভাংচুর করে। সন্ত্রাসীরা আমাদের নিকট থাকা ২১,৭৭৫ (একুশ হাজার সাতশত পঁচাত্তর) টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমাদের রাজনৈতিক সহকর্মী মোহাম্মদ জিলানী সংবাদ পেয়ে লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আমি ও আমার দুই সহকর্মীকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠায়। আর আক্তার বিল্লাহকে উদ্ধার করে ফকিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অবস্থা গুরুতর দেখে আক্তার বিল্লাহকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে। আজ অবধি আমার সহযোদ্ধা প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বাগেরহাট হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আক্তার বিল্লাহর শরীরে ৫৫টির উপরে সেলাই দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পরের দিন ২৫ মার্চ আমার পিতা মো. আবু সাহিদ বাগেরহাট সদর থানায় মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং ২৫। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। যেখানে মামলার আসামী হালিম মোড়লের নামে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। তারপরও সে প্রকাশ্যে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা সবাই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসুচি ‘হৃদয়ে পিতৃভূমি’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এলাকায় কাজ করতে গিয়ে নির্মমভাবে হামলা স্বীকার হয়েও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন সহায়তা পাচ্ছিনা। প্রযুক্তির এই যুগে আসামীদের কেন পুলিশ এখনও গ্রেফতার করছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, মানবতার মা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দক্ষিনবাংলার রাজনৈতিক অভিভাবক শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী, তরুন প্রজন্মের আইকন বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সাহরান নাসের তন্ময়, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এসব সন্ত্রাসীদের ও তাদের মদদদাতাদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
আসামী গ্রেফতারে পুলিশের অবহেলার বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো. সেরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৭১৬-৪৭২০৮৯) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমরা আসামীদের গ্রেফতারে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাদীদের কাছে আসামীদের অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে আমাদেরকে তারা জানাতে পারে। তবে আমরা আশাবাদী খুব শীঘ্রই আসামীদের গ্রেফতার করতে পারবো।
আসামীরা এলাকায় ঘোরাফেরা করছে কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না এমন অভিযোগের বিষয়ে বাগেরহাট সদর থানা অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৩২০-১৪১১৭৯) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটা সত্য নয়, এটা বলতে পারে তারা তাদের বক্তব্যে। বিষয়টিতে একটি মামলা হয়েছে। আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছি। আমার জানামতে আসামীরা কেউই এলাকাতে নেই। আমি তারপরও খোজ নিয়ে দেখবো। আমাদের কর্মকর্তারা আসামীদের গ্রেফতারে সব জায়গায় কাজ করছে।