শরণখোলা প্রতিনিধি : প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জোসৎনা বেগমকে (৩৫)। পরে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। কাটা হয় দুই হাতের কবজি। পেট কেটে গর্বের ছয় মাসের ভ্রুণ বের করে পলিথিনে প্যাকেট করা হয়। এর পর চার টুকরো লাশ এবং ভ্রুণ বস্তাবন্দী করে রেখে দেওয়া হয় ঘরে। লাশ গুম করার জন্য পাশের বলেশ্বর নদে ফেলার অপেক্ষা ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু সেই সুযোগ করে ওঠার আগেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাটের শরণখোলার তাফালবাড়ীতে। গোপন সংবাদ পেয়ে শরণখোলা থানা পুলিশ ওইদিন রাত ১১টার দিকে কনস্টেবলের বাসা থেকে ভ্রুণসহ বস্তাবন্দী চার টুকরো লাশ উদ্ধার করে। এসময় আটক করা হয় তাফালবাড়ী ফাঁড়ির কনস্টেবল ঘাতক সাদ্দাম হোসেনকে (৩০)।
এঘটনায় নিহতের মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক সাদ্দাম হোসেনকে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক সাদ্দাম হোসেন সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের আ. লতিফের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদান করেন সাদ্দাম। তার কনস্টেবল নম্বর ১০২৬। একবছর আগে খুলনার রূপসা উপজেলার চাঁনপুর (নারকেলি) গ্রামের মৃত আবু বকর শেখের মেয়ে জোসৎনাকে বিয়ে করে ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তাদের সঙ্গে জোসৎনার আগের সংসারের ছেলে জিসানও (১০) থাকতো। এক সন্তান নিয়ে প্রথম স্ত্রী থাকেন সাদ্দামের গ্রামের বাড়িতে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোর আনুমানিক পাঁচটার দিকে প্রথমে জোসৎনা বেগমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর দেহ থেকে মাথা ও দুই হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। পেট কেটে গর্বের ভ্রুণ বের করে আলাদা পলিথিনের প্যাকেটে এবং চার টুকরো লাশ একটি বস্তায় ভরে ঘরে রেখে দেওয়া হয়। গুম করার জন্য পাশের বলেশ্বর নদে ফেলার অপেক্ষা ছিল সাদ্দাম। কিন্তু এর আগেই আমরা ঘটনা টের পেয়ে যাই। ঘাতক সাদ্দাম জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।