নওয়াপাড়া অফিস : যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় আল মদিনা হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক কমপ্লেক্সে ভুল চিকিৎসায় একজন নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ক্লিনিক মালিক কোন পর্যায়ের ডাক্তার না হয়েও অপারেশনের পর জরুরী রোগীকে তিনি চিকিৎসা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় প্রসুতিকে সিজারিয়ানের পর সুস্থ্য বাচ্চা ভুমিষ্ট হয়। শুক্রবার সকাল ৬ টায় ওই বাচ্চার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় প্রসুতির পক্ষে সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মৃত ওই নজাতকের মায়ের নাম নাসরিন আক্তার পাখি (৩০)। তিনি মনিরাপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়ানের শুভোলকাঠি গ্রামের প্রবাসী লিটন হোসেনের স্ত্রী।
লিটন হোসেনের বোন জেসমিন আক্তার জানান, গত বৃহস্পতিবার(২৯/৯/২৪) সন্ধ্যায় প্রসাব বেদনা উঠলে তার ভাবি নাসরিন আক্তারকে নওয়াপাড়ার ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর রোগাীকে হাসপাতালের মালিক নাজমুল হোসেন নিজে আলট্রাসনোগ্রাফি করেন। তিনি কোন সময় না দিয়েই একজন ডাক্তার ডেকে আনেন। ডা. ও নাজমুল হোসেন রোগীকে নিয়ে অপরেশন থিয়েটারে ঢোকেন রাত নয় টায় একজন ছেলে বাচ্চাকে বের করে এনে তার কোলে তুলে দেওয়া হয়। বাচ্চার ওজন ছিলো সাড়ে তিন কেজি। তার কোলে এসে বাচ্চা খুব কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় নাজমুল হোসেন একটি গুড়ো দুধ কেনার স্লিপ ধরিয়ে দেয়। সাথে সাথে দুধ কিনে বাচ্চাকে খাওয়ানো হয়। এ সময় একটু শ^াস কষ্ট দেখা দিলে বাচ্চাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অক্সিজেন দেওয়া কালিন বাচ্চার পা কালো বর্ণ ধারন করছে কিনা তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছিলো। সকাল ৫ টায় বাচ্চা বলবদ হলে নাজমুল দইটি ইনজেকশন ও ট্যাবলেট কেনার প্রেসক্রিপশন দেয়। দোকান থেকে ওই প্রেসক্রিপশনের ইনজেকশন ও ওষুদ কেনা হয়। একজন নার্স বাচ্চার দুই উরুতে দুইটি ইনজেকশন দেন ও একটি ট্যাবলেটের অর্ধেক গুলে খাওয়ান। সাথে সাথে বাচ্চা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন ক্লিনিক মালিক একটি এ্যামবুলেন্স ডেকে রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন। শিরোমনি বাজারে পৌছালে বাচ্চার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের মালিক নাজমুল হুদা সবকিছু অস্বীকার করেন। এ সময় রোগীর লোকজন প্রতিবাদ করলে তিনি এ প্রতিনিধির কাছে চুপ হয়ে যান।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বদরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পত্রে একটু জটিলতা থাকায় তদন্ত কমিটি করিনি। আগামী কাল তদন্ত কমিটি করে দ্রুত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।