বিজ্ঞপ্তি :
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, একাত্তরে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের বসবাস উপযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বাধীন, সার্বভৌম ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আবারও একাত্তরের পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। সেই সময়ের সরকার তাদেরকে মূল্যায়িত করে বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রেরণ করে, গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদার্য়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিরত পরিশ্রম করে চলেছেন। দেশের মানুষও পরিশ্রম করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশের উন্নয়ন সহ্য করতে পারছে না। তারাই সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ঘটাতে পারে।
উপাচার্য বলেন, যারা ধর্মান্ধ তাদেরকে ব্যবহার করে একটি কুচক্রিমহল দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এসব ঘটনায় যারা জড়িত এবং এদের পেছনে যে অপশক্তি কাজ করছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দ্রুত বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, মুষ্টিমেয় কিছু লোকের জন্য দেশ, জাতি ও ধর্ম কলুষিত হতে পারে না। তাই আসুন আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি, যে আন্দোলনের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যাতে ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যারা সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িত তারা কোন ধর্মের না, তাদের বড় পরিচয় তারা সন্ত্রাসী। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এসব ঘটনার পেছনে যেসব অপশক্তি কাজ করছে তাদের খুঁজে বের করে বিচার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্মের বাইরে আমরা মানুষ। আমাদের মানবিকতা ধরে রাখতে হবে। যাতে সকলে একসাথে একদেশে শান্তিতে বসবাস করতে পারি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তানজিল সওগাত এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোঃ সারওয়ার জাহান, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাস, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. সাবিহা হক, বিবিএ ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ এনামুল হক ও ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক রকিবুল হাসান সিদ্দিকী। মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির অন্যান্য সদস্য শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।