মনোজ রায় হিরু, আটোয়ারী : আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ আলাউদ্দীনকে (৩২) আটক করেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী থানা পুলিশ। ১৫ জুলাই শেষ রাতে সুদূর বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা এলাকা হতে আলাউদ্দীনের শ্বশুর বাড়ি থেকে তাকে আটক করে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের সহযোগিতায় আটোয়ারী থানা পুলিশ। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন আটোয়ারী থানার সাব ইনস্পেকটর মোঃ শাহীন আল মামুন। আলাউদ্দীন উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর ভূমি অফিস সংলগ্ন জনৈক মোঃ হাবিবুর রহমানের পুত্র।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে কিছু দুষ্কৃতকারী। আলোচিত এ হত্যাকান্ডে বিজ্ঞ আদালত ২১ আসামীর মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং বাকী ১৩ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আটটি আপিল ও সাতটি জেল আপিল করেন আসামীরা। এসব আপিল ও ডেথ্ রেফারেন্সের শুনানি একসঙ্গে নিয়ে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এদিকে আটোয়ারী পুলিশ জানায়, সুত্রাপুর থানার মামলা নং -৮/ডিসেম্বর ২০১২, জি.আর -৩৬৭/২০১২ মোতাবেক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, নম্বর -৪ এর বিজ্ঞ বিচারক কর্তৃক ইস্যুকৃত ওয়ারেন্টের সুত্র ধরে ওই মামলার ১৩ নম্বর পলাতক আসামী আলাউদ্দীনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়াও আলাউদ্দীনের নামে সুত্রাপুর থানায় আলোচিত এ ঘটনার পূর্বে আরেকটি মামলায় তার ওয়ারেন্ট ইস্যু ছিল। যার মামলা নম্বর-১৫/নভেম্বর ২০১২, জি.আর ৩৫০/২০১২। আলাউদ্দীন যায়যায়দিনকে জানান, সে সময় সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল এবং নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবী করলেও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কিংবা অন্য কোথাও তার নাম ছিল না। ঘটনার দিন সে ছাত্রলীগের মিছিলে ছিল কিন্তু বিশ্বজিৎ দাসকে আক্রমনের সময় জড়িত ছিলনা। কেন মামলার আসামী করা হলো তাকে এর উত্তরে সে জানায়, ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের শিকার সে। মামলার পর থেকে সে ঢাকার কোনাবাড়ী সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিল। পলাতক থাকা অবস্থায় প্রেম করে ২০১৬ সালে বিয়ে করে সে। আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোহেল রানা আলাউদ্দীনের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ১৬ জুলাই সকালে আলাউদ্দীনকে পঞ্চগড় আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।