জামাল উদ্দিন জীবন
মালেক: মেম্বার মালেকের বাসায় আজ অনেক লোকের ভির রয়েছে।গ্রামের কম বেশি সকলেই এসেছে।উঠানে মাদুর পেতে বসে আছে সকলে।কিছু লোক জন ঘোরা ফেরা করছে এমন সময় অলি এসে সকলকে বলছে মিয়ারা ভয় করোনা তোমরা আমরাতো হুজুরের লোক আমাগো কোন ক্ষতি হবে না।সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে চার/পাঁচ জন মেলেটারি নিয়ে মালেক মেম্বার বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো।
অলি সকলকে সাবধান করে দিলো কেউ কোন কথা বলবে না হুজুর মেহমান নিয়ে আসছে।হাফিজ আসলো মেম্বারের সাথে সাথে।
অলি:আরে হাফিজ তুমি এত দেরী করলা কেন যাও গিয়ে বস।তোমার ভাগ্য ভাল হুজুর কেবলি মেহমানদের নিয়ে বাসায় আসলো।
মেম্বার:কইরে অলি হাফিজ কি আসছে।অলি জি হুজুর আরে হাফিজ কোথায় তুমি? হুজুর তোমাকে ডাকে তুমি পিছনে কেন হাফিজ।হাফিজ জি হুজুর আমাকে ডাকছেন।আরে মিয়া তোমারে না বলছি মেহমান আসবে তুমি আগে থেকে এখানে থাকবানা।জি হুজুর বাড়ি হতে আসতে একটু দেরি হয়ে গলো।
মেজর:তোমহারা সব লোক এধার হায় মালেক।জি হুজুর সব লোক হায়।ঠিক হায় তোম সবকো লেকে কাল সুবা মেরা পাছ আনা সামাজ গিয়া।মালেক জি হুজুর হাম আচ্ছাছে ছামাজ গিয়া।হুজুর এক বাত কহিয়ে হা হা জরুর বাতাইয়ে।আপকালিয়ে খানা পিনাকা ইন্তেজাম হায়।মেজর ঠিক হায় বাদমে।
মালেক:মেলেটারিদের সাথে নিয়ে সামনের দিকে চলতে থাকে।গ্রামের অনেকে তার পিছু পিছু আসে।বড় রাস্তা পার করে দিয়ে অলিরা বাড়ির পথে হাটতে থাকে।হাফিজ বলে অলি ভাই আমি তাহলে বাড়িতে যাই এখন।
অলি:আরে মিয়া তুমি আইলা মাত্র এখনই যা্ওয়ার জন্য পাগল হইলা কেন মিয়া।মেয়ে মানুষের মত যাই যাই কর কেন।
হাফিজ:হাফিজ বলে সারাদিন অনেক কাজ করছিতো শরীলটা ভালো লাগে না অলি ভা্ই।আচ্ছা মিয়া যাও তয় সকাল সকাল আইসা পড়বা কথাটা মনে থাকে যেন।চলবে জীবন।
হাফিজ:বাড়িতে ফেরার পথে ধীর পায়ে হাটে আর চিন্তা করে সামনে মহাবিপদ কি করা যাবে।ছেলেটাও বাড়িতে আসলো এমন সময় কিছু ভাবতে পারছেনা আর দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছে।মাস্টার সাহেবকে খরটা দিতে হবে অন্য কাউকেতো দেখতে পেলাম না।তারা কি আমাগো গ্রামটা জ্বালাইয়া পোড়াইয়া দিতে চায় মানুষগুলার চোখে মুখে একটা অজানা আতঙ্ক দেখলাম আমি।আমারও ভয় ভয় লাগতাছে তাদের কথা শুনে।মেম্বার সাব কেমন জানি করছিল তাদের সামনে।তবে কি মেম্বার সাহেবও ভয়ে আছে।মেজের এর সাথে লোকজনদের নিয়া নিজেকে প্রশ্ন করে হাফিজ, আর ভাবতে থাকে।ভাবতে ভাবতে হাফিজ বাড়ির পথে হাটছে আর বলছে দেশটার জে কি?হবে বুছি না কিছু ছেলেটাও বাড়িতে।
আজাদ:মাস্টর সাহেব বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে আছেন মুখটা খুব মলিন হয়ে আছে।মেলেটারি গ্রামে আসার পর লোক জনের আসা যাওয়া কিছুটা কমে গেছে।অলিরা সকলকে নিয়ে কি যে করছে কিছুই বুঝতে পারছিনা।সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে বাড়ির পাশা দিয়ে হাফিজ উড়ু মনে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছে।আজাদ প্রথমে দেখে বুঝতে চেষ্টা করলো কে যাচ্ছে।পরে নিশ্চিত হলো হাফিজ ভাই।তখনি ডাকলো হাফিজ ভাই ও হাফিজ ভাই কি ব্যাপার কোন কথা না বলে চলে যাচ্ছ কেন।তোমার কি মন খরাপ না শরিল খারাপ।আজাদ মাস্টারের ডাকে হাফিজ ফিরে তাকালো।আরে মাস্টার সাহেব যে কোথায় যান এই সন্ধ্যা বেলায়।মাস্টার কিছুটা অবাক হয়ে শুনছে হাফিজের কথা।না হাফিজ ভাই এই দিকে একটু হাটা হাটি করছিলাম আপনাকে আসতে দেখে একটু সামনে আসলাম।তা খবর কি হাফিজ ভাই?অনেক দিন হলো আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় না।
হাফিজ:কি বলবো আজাদ ভাই?কয়েক দিন বেশ ব্যস্ত ছিলাম আর ছেলেটাও বাড়িতে আসছে ঢাকা থেকে।তার মধ্যে আবার মেলেটারি অলিরা দিন রাত এসে ডাকা-ডাকি করে আমাকে।স্ত্রী পুত্র নিয়ে অনেকটা চিন্তায় আছি আমি।কি যে করবো বুঝতে পারছিনা।
আজাদ: হাফিজকে অভয় দিয়ে বলে কি কি হলো এই কয়েক দিন আমাকেতো তোমরা কিছু জানাওনি।আগে দিনে দু/এক বার বাসায় আসতে এখন তাও আসোনা।আমি কি করে জানবো তোমাদের আর গ্রামের অবস্হা বলোতো হাফিজ ভাই।