ইমতিয়াজ উদ্দিন,কয়রা (খুলনা) : কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ লঞ্চঘাটের পল্টুন এর সাথে সড়কের সংযোগ না থাকায় কয়রা থেকে নদীপথের খুলনাগামী শতাধিক যাত্রীদের দূর্ভোগ এখন নিত্য দিনের ব্যাপার। দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীরা এমন ভোগান্তির স্বীকার হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ব্যবস্থা নিতেই দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিন ৪ টি যাত্রীবাহী লঞ্চ এ নৌপথে যাতায়াত করে। কিন্তু মদিনাবাদ লঞ্চঘাটের পল্টুনে উঠার সিঁড়ি না থাকায় লঞ্চগুলো নদীর চরে ভিড়তে বাধ্য হয়। আর ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। ভাটার সময় হাটু কাঁদা পেরিয়ে লঞ্চে আরোহন, আর জোয়ারের সময় সহায়ক হয় গামছা। মহিলা ও শিশুদের দূর্ভোগের সীমা থাকে না। বোরখা কাপড় ভিজিয়ে আদরের সন্তান কোলে কাঁধে নিয়ে বহু কষ্টে লঞ্চে উঠতে হয়। বিকল্প কোন যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন এমন দূর্ভোগ পোহাতে হয় বলে যাত্রীরা জানান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মদিনাবাদ লঞ্চঘাটে বিআইডব্লিউটি’র নির্দিষ্ট পল্টুন থাকলেও পল্টুনে উঠার সিঁড়ি নেই। একারণে লঞ্চ যথা নিয়মে পল্টুনের সামনে নোঙর করতে পারেনা। এতে খুলনাগামী ও খুলনাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লঞ্চ যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে হাটু পরিমান পানি ও কাঁদা পার হয়ে লঞ্চে ওঠা-নামা করতে হচ্ছে। সীমাহীন ভোগান্তিতে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক লোকদের। অনেকে তাদের অসুস্থ স্বজনদের কোলে তুলে ঝুঁকি নিয়ে কাদা-পানি পার হয়ে লঞ্চে উঠছেন। গতকাল এম ভি ওয়াটার কিং লঞ্চের যাত্রী শাহিন হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ইজারাদাররা তো ঠিকই টাকা নিয়ে নিচ্ছে কিন্তু এই দূর্ভোগের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুর রব খোকন বলেন,কাঁদা পানিতে যাত্রিদের লঞ্চে উঠতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তার পরেও মালা মাল উঠা নামানোতে রয়েছে আরও সমস্যা। এ জন্য জরুরী ভিত্তিতে পল্টুন এর সাথে সড়কের সংযোগ স্থাপন করা প্রয়োজন বলে তিনি জানান। কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধু এই এলাকার লোকজন এই ঘাট দিয়ে চলাচল করেনা পাশ্ববর্তি অনেক এলাকার লোকজন এ লঞ্চঘাট দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। তিনি আরও বলেন, পল্টুন এর সাথে সড়কের সংযোগ না থাকায় কাদায় নেমে লঞ্চ কিংবা ট্রলারে উঠতে হয় নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের। রাতে যাত্রী ও মালামাল ওঠানামা করানো আরও কঠিন ব্যাপার । তিনি জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। লঞ্চ মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয় ঘাটে র্টামিনালে যাত্রিরা উঠতে না পারায় বাধ্য হয়ে নদীর চরে লঞ্চ ভিড়াতে হয়। ফলে যাত্রীদের ওঠানামায় কোন সহায়তা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়না। এখানে রাস্তা থেকে পল্টুনে উঠার সিঁড়ি দেয়া হলে, যাত্রীদের দূর্ভোগ এড়ানো সম্ভব। বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপ-পরিচালক কায়ছারুল ইসলাম লঞ্চঘাটের পল্টুনের সাথে সড়কের সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।