ইউনিক ডেস্ক : ইউনিক নিউজের যশোর প্রতিনিধি ও দৈনিক সমাজের কাগজের ফটোসাংবাদিক সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সদস্য রবিউল ইসলাম মিটু (৫০) পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আকস্মিকভাবে মারা গেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।) শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার পর জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত চারজনের মরদেহ রয়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। বাসা থেকে বেরিয়ে মিটু মরদেহের ছবি আনার জন্য হাসপাতাল মর্গে গিয়েছিলেন। মর্গে রাখা চারজনের ছবি তুলে বের হয়ে সামনে আসনে। সেখানে দাড়িয়ে এক পুলিশ সদস্যের কথা বলে নিহত চারজনের পরিচয় সম্পর্কে কথা বলছিলেন। এসময় তিনি পড়ে যান। ওখানেই মারা যান তিনি।
সহকর্মী সাংবাদিকরা জানান, মর্গ থেকে মৃতদেহের ছবি নিয়ে মিটু সহকর্মীদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের বাসভবনের সামনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি অন্য একটি রিপোর্টের জন্য তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। এসময় হঠাৎ পড়ে যান তিনি। সহকর্মীসহ উপস্থিত লোকেরা জরুরি বিভাগে আনলে ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডাক্তার রাশেদ রেজা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মিটু মারা গেছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বিভাগে আনা হলেও ডাক্তাররা তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ পাননি।
রবিউল ইসলাম মিটু যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের বাইলেনের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবা মৃত ইব্রাহিম মোল্লা। মিটু দুই সন্তান, মা, তিন ভাই-বোনসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তার ছোট মেয়েটির বয়স মাত্র তিন মাস। ১৬ বছর বয়সী বড় ছেলেটি বাদশাহ ফয়সল ইসলামী ইনসটিটিউটের দশম শ্রেণির ছাত্র।
রবিউল ইসলাম মিটুর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ছুটে যান তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। দৈনিক সমাজের কাগজের প্রকাশক অলোক অধিকারী, সম্পাদক সোহরাব হোসেন, সিনিয়র রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা মুন্না, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি নূর ইসলাম, সহ-সভাপতি শহিদ জয়, সাধারণ সম্পাদক এম আইউব, ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকরা। পরে তার লাশ হাসপাতাল থেকে ঘোপ বাইলেন সড়কে নিয়ে যাওয়া হয়। মিটুর আকর্ষি¥ক মৃত্যুতে হতবাক হয়ে পড়েন।
প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সম্পাদক নিউজ পোর্টাল সুবর্ণভূমির সম্পাদক আহবান কবীর জানিয়েছেন,মিটু সমাজের কাগজের ফটোসাংবাদিক হলেও সুবর্ণভূমির প্রতি তার ছিল বিশেষ দরদ। এমন কোনো সময় নেই, যখন মিটুর সহযোগিতা চেয়ে সুবর্ণভূমি বিমুখ হয়েছে। তার মৃত্যুতে তিনি গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবার-সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সদস্য রবিউল ইসলাম মিটুর মৃত্যুতে গভীর শোক, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি নূর ইসলাম, সহ সভাপতি শহিদ জয়, সাধারন সম্পাদক এম. আইউব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মুন্না, দপ্তর সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তারেক, কোষাধ্যক্ষ মোঃ আকরামুজ্জামান, ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মীর কামরুজ্জামান মনি ও নির্বাহী সদস্য অনুব্রত সাহা মিঠুন।
বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের আজীবন সদস্য রবিউল ইসলাম মিটুর মৃত্যুতে গভীর শোক, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মো. সামসুজ্জামান, সহ-সভাপতি কাজী রকিবুল ইসলাম, আমির হোসেন মিলন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মুন্না, সহ-সাধারণ সম্পাদক নূরজাহান আরা নীতি, প্রকাশনা সম্পাদক আহমদ রাজু, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. আহাদ আলী লস্কার, নির্বাহী সদস্য শেখ ইমামুল কবির, আহমেদ মাহাবুব ফারুক, রফিকুল পাশা, আবুল হাসান তুহিন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ্মনাভ অধিকারী প্রমূখ।
শনিবার ঈশাবাদ ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাতেই ঘোপ কবরস্থানে দাফন করা হয়।