কুষ্টিয়া : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই নির্যাতিতা শিক্ষার্থী জবানবন্দি নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের তদন্ত কমিটি। আজ শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক রেবা মণ্ডলের নেতৃত্বে তদন্ত দল নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেছেন।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই ছাত্রী আজ দুপুর সাড়ে বারোটায় হলে প্রবেশ করেন। এ সময় সঙ্গে তাঁর বাবা ও মামা ছিলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে পরিবেশ স্বাভাবিক ছিল। যদিও অভিযোগকারী ওই ছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশকে কেন্দ্র করে প্রধান ফটকে নিরাপত্তা ছিল কড়াকড়।
ওই ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দিতে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলে। পরে তদন্ত কমিটি ওই ছাত্রীর লিখিত বক্তব্য নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তদন্ত কমিটি ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে নির্যাতনের স্পটগুলো ঘুরে ঘুরে দেখে। অন্য ছাত্রীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে হল থেকে বের হয়ে পাবনায় বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন ওই ছাত্রী ও তাঁর পরিবার।
নির্যাতিতা ছাত্রী তদন্ত দলের কাজে সন্তুষ্ট। ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, আপাতত বাড়িতে থাকবেন। তদন্তের প্রয়োজন হলে আবার আসবেন। নির্যাতিতার বাবা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন।
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রেবা মণ্ডল বলেন, ‘তদন্তের সময় আরও দুই সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে আশাব্যঞ্জক তথ্য ও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে, তদন্তের স্বার্থে তা এখন বলা যাচ্ছে না। আর আগামী ২০ তারিখে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনার জন্য ডাকা হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে আরও তথ্য-প্রমাণ কারোর কাছে থাকলে তা তদন্ত কমিটির কাছে দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আইন অনুযায়ী মেয়েটির জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নবীন ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। একপর্যায়ে আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগালসহ বিভিন্ন অমানবিক নির্যাতন করেন। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে খুব সকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িতে চলে যাই।’
অভিযুক্ত ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ এদিকে, উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ছাত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তাবাসসুম হল থেকে বেরিয়ে যান।