মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া, কক্সবাজারঃসাম্প্রতিক সময়ের ভারী বর্ষণ, সে সাথে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি, বসতবাড়ি বিধ্বস্ত, গ্রামীণ সড়ক বিপর্যয়ের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কোটি টাকার ধান, চাল নষ্ট হওয়ার জন্য মুষ্টিমেয় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী কর্তৃক খাল জবর দখল পূর্বক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকে দায়ী করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী ইউএনও’র নিকট লিখিত অভিযোগ ও সড়কে মানববন্ধন করেছে। উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্য মতে এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের উপর দিয়ে ভয়ে যাওয়া ১২টি খাল এখন অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে। তৎমধ্যে উল্লেখযোগ্য পালংখালী খাল, থাইংখালী খাল, রেজু খাল ও উখিয়া সদর এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাতাবাড়ী মুহুরীপাড়া খাল অন্যতম। সরেজমিন ঘটনাস্থল পাতাবাড়ী খাল ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকার প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন দলের কর্মী আবছার ইসহাক ও রহিম প্রভাববিস্তার করে পাতাবাড়ী খালের মধ্যস্থলে অবকাঠামো নির্মাণ করে দীর্ঘস্থায়ী ভবন নির্মাণ করেছে। যে কারনে খালের পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে।বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ জানান, আবছার ট্রের্ডাস ও ইসহাক সওদাগর খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ প্রাক্কালে বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছিল। তিনি সঠিক সময়ে অবৈধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার নিরীহ গ্রামবাসী ও ব্যবসায়ীদের বহন করতে হচ্ছে। গত বুধবার প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানি নিষ্কাশনে অবৈধ স্থাপনায় বাধা প্রাপ্ত হয়ে ঘিলাতলী, মালভিটা, গরু বাজার, সিকদার বিল, পাতাবাড়ীসহ ৬টি গ্রামে শতাধিক বসতবাড়ি বিধ্বস্ত ও ২ শতাধিক ঘরবাড়ি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী ধান, চাল ও অন্যান্য মালামাল সহ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ সরকারি চাকুরী জীবি জসিম উদ্দিন গ্রামবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ করেন। প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল উখিয়া সদর দক্ষিণ ষ্টেশন পাতাবাড়ী খালের মুখে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা পরিদর্শণ করেন। এসময় শত শত ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী ইউএনওকে উক্ত অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার দাবী জানান। মানববন্ধন করেন সড়কে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ইউএনও মোঃ মাঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, জবর দখল চিহ্নিত অবকাঠামোর অংশ বিশেষ পরিমাপ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান খালের উপর নির্মিত অবকাঠামোর জায়গাটি জোত না সরকারি তা পরিমাপ করার জন্য ১০ জুলাই তদন্ত করেছেন। ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ এ পর্যন্তও অবৈধ দখলদারদের নির্মিত ভবনের জায়গাটি পরিমাপ করে সঠিক ব্যাখ্যা আসতে পারেনি। যে কারনে অনেকেই এটাকে লোক দেখানো পরিদর্শন বলে কড়া সমালোচনা করতে দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ইসহাক সওদাগরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তার নির্মিত অবকাঠামোর অর্ন্তভুক্ত খালের অংশটিও জোত জমি।