উত্তপ্ত খুলনার পাটকলের শ্রমিক সেক্টর

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-০১ - ১১:৩২

খুলনা : বকেয়া মজুরী বেতন পরিশোধের দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৮ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল, সামাবেশ কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছে। এ সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠেছে। উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পাটকল সেক্টর। যে কোন মুহূর্তে অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

রবিবার ভোর থেকে তৃতীয় দিনের মতো মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে তারা কর্মবিরতি পালন করছে। এদিন ১১ দফা দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শ্রমিকরা। সকাল সাড়ে ১০টায় মিছিলটি বিআইডিসি সড়ক হয়ে নতুন রাস্তা ঘুরে ফের স্ব স্ব মিল গেটে শেষ হয়। দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে খেটে খাওয়া শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্টার, প্লাটিনাম, দৌলতপুর, ক্রিসেন্ট, ইস্টার্ণ, জেজে আই ও আলীম মোট ৭টি জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এদিন চলেছে কার্পেটিং এবং খালিশপুর জুট মিল। শনিবার থেকে কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেও খালিশপুর জুট মিলের কোন শ্রমিক উৎপাদন কাজে যোগ দেয়নি।

শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ৮ সপ্তাহের মজুরির দাবিতে প্লাটিনাম জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় একে একে ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। এ চারটি মিল বন্ধের সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টার দিকে আটরা-গিলাতলা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ণ এবং যশোর অভয়নগরের জে জে আই জুট মিলের উৎপান বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আর শনিবার খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।

পাটকলগুলোর সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট জুট মিলে প্রায় ৫ হাজার, প্লাটিনামে সাড়ে ৪ হাজার, স্টারে সাড়ে ৪ হাজার, দৌলতপুর জুট মিলে সাড়ে ৬শ’, ইস্টার্নে ২ হাজার, আলীমে দেড় হাজার এবং জেজেআই জুট মিলে ২ হাজার ৬শ’ এবং খালিশপুর জুট মিলে প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এসব পাটকলের শ্রমিকদের চার থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, মজুরি না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা। তাই তারা বাধ্য হয়ে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবে না।

বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) খুলনা অঞ্চলের লিয়াজো কর্মকর্তা গাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, খামাকা শ্রমিকরা মিল বন্ধ করে একাকার করে ফেলেছে। অন্য অঞ্চলের সব মিল চালু কোন সমস্যা নেই। এখানে কেউ কেউ ফায়দা নেওয়ার জন্য এ আন্দোলন করছেন। তিনি জানান, বেতনের বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই দিন অফিস বন্ধ ছিলো। ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।