উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশঃ ২০২১-০৩-২৮ - ১৬:১৪

ঢাকা : দলীয় নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে থেমে থাকলে চলবে না, আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে।’
রবিবার (২৮ মার্চ) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সারাবিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা শুভেচ্ছা দিয়েছেন। এটা আমাদের সম্মানের, এটাই আমাদের স্বার্থকতা। তবে আমাদের যাত্রা অনেক দূরের। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন করতে হবে। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বো, এটাই প্রতিজ্ঞা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ৫ দেশের প্রধান এসেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছা বার্তা আমরা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এটাই আমাদের স্বার্থকতা।’

তিনি বলেন, ‘সময়ের অভাবে সব বার্তা শুনাতে পারিনি। সমস্ত বার্তা রক্ষিত আছে। তৃণমূল পর্যন্ত প্রচার করতে হবে। তাদের শুভেচ্ছা বার্তা যেন জনসাধারণ জানতে পারে।’ সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে এগুলো প্রচারে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।

সবুজ বাংলা আরও সবুজ করতে বৃক্ষরোপণ করতে নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কোনও জলাশয় যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্য উদপাদন করে নিজেদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতি কোনদিকে যায় বলা যায় না। যাতে অন্তত খাদ্য সংকট না হয়। আমরা নিজেদের খাদ্য নিজেরাই যোগান নিশ্চিত করে অন্যকেউ দেবো।’

ভ্যাকসিন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যাতে মাস্ক ছাড়া বাইরে না যায়। সবাইকে নিরাপদ দূরত্ব মেনে বসতে হবে। সভা-সেমিনার-কর্মশালা স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে করতে হবে। যতদূর সম্ভব খোলা যায়গায় কর্মসূচি করতে হবে।’ ঘরের মধ্যে করলে করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দেয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সব অনুষ্ঠান সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। পাশাপাশি গেলো বছর মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি সামনেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষ যেন কষ্টে না থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যা করার করবো। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও মানুষের পাশে থাকতে হবে। যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমাদের প্রতিজ্ঞা বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু তাঁর সংবিধান ও আইনে যে মৌলিক নির্দেশনা রেখে গেছেন। আমরা সে আলোকেই পথ চলছি। তার সব কাজ পূর্ণ করছি।’ তিনি বলেন, ‘গৃহহীন ও ভূমিহীন কেউ যেন বাদ না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কেউ বাদ গেলে জানাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছরে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছি। এটা নতুন কিছু না, কোনও ম্যাজিকও না। জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করেই এসব অর্জন। এ দেশের মানুষ জাতির পিতা নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করে। ৭ মার্চের ভাষণে যা যা করতে বলেছেন, মানুষ তাই করে। তিনি বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেও দাবায়ে রাখা যায়নি, যাচ্ছে না। আমরা তার আদর্শে দেশ পরিচালনা করে এগিয়ে যাচ্ছি।’ সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ প্রমুখ।