উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের ক্ষমতা কেড়ে নিল হাইকোর্ট

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-৩০ - ১১:৪১

ইউনিক ডেস্ক : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকায় থাকবেন না। কেবলমাত্র তারা সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা থাকার বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেন।

উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আর্থিক শৃঙ্খলা আনয়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাচিবিক দায়িত্ব পালনের বিধান সম্বলিত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন আমন্ত্রণপত্রে উপজেলা পরিষদ না লিখে উপজেলা প্রশাসন লেখার সিদ্ধান্তকেও অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত উপজেলার বিভিন্ন কমিটিতে ইউএনওকে সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করা সংক্রান্ত পরিপত্রের বিষয়ে কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি।

এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওই রুল জারি করা হয়। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিবসহ ১৫ বিবাদীকে জবাব দিতে বলা হয়।

রিটকারী পক্ষের কৌঁসুলি ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, মাঠ প্রশাসন কোনো চিঠিপত্র লিখলে বা অনুষ্ঠান করলে দাওয়াতপত্র বা ব্যানারে উপজেলা পরিষদ না লিখে উপজেলা প্রশাসন লিখছে। এর মাধ্যমে ইউএনওরা স্থানীয় সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।

এছাড়া সরকারি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো কমিটি গঠন করা হয় তার সবগুলোতে ইউএনওকে চেয়ারম্যান করা হয় এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের করা হয় উপদেষ্টা।

আবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় উল্লেখ থাকে ইউএনও ইচ্ছে করলেই আরও সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এর মধ্য দিয়ে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণকে প্রায় নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। এমনি অনেক ক্ষেত্রে আয়-ব্যয়ের হিসাবও তাদেরকে দেওয়া হয় না। যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও স্থানীয় সরকার পদ্ধতির চেতনার পরিপন্থী।

বুধবারের রায়ের পরে ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা থাকবেন না। তারা কেবলমাত্র পরিষদকে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করলেও তারা উপজেলা পরিষদের জবাবদিহিতার মধ্যে থাকবে। আর চিঠিপত্রে এখন থেকে উপেজলা প্রশাসন নয়, উপজেলা পরিষদ ব্যবহার করতে হবে।

উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান, গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন, কালিয়াকৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার ২০২০ সালে রিট করেন। সে রিটের পর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আজ রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিলেন হাইকোর্ট।