খুলনা : ৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরীর ৩৬টি স্থান নির্ধারণ করে সেখানে বসানো হয়েছে তল্লাশী চৌকি। মোতায়েন করা হয়েছে দেড় সহস্রাধিক পুলিশ।
এদিকে চেয়ারপার্সনকে সাজা দেয়া হলে তা প্রতিহত করতে কাফনের কাপড় পরে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে খুলনার ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল। এছাড়া কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবে তাই মেনে চলার ঘোষাণাও দিয়েছে দলটি। অপরদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধংসাতœক কর্মকান্ড প্রতিহত করতে পুলিশকে সহায়তা করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আর তাতেই উৎকণ্ঠার নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা মহানগরী। সর্বত্র থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা ফাঁকা। মোড়ে মোড়ে র্যাব-পুলিশের টহল, তল্লশি। চলছে গ্রেফতার অভিযান। বাদ যাচ্ছে না সন্দেহভাজনরা। এক ধরনের থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে খুলনাজুড়ে। তবে খুলনায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হলেও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে কেএমপি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
কেএমপির মুখপাত্র ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, মহানগরীর রূপসা ঘাট, জেলখানা ঘাট, পথের বাজার, গল্লামারী, রয়্যাল মোড়, শিববাড়ি মোড়, ডাকবাংলো মোড়সহ ৩৬টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (৭ ফেব্র“য়ারি) থেকে (৯ ফেব্র“য়ারি) পর্যন্ত মহানগরীতে সব ধরনের (বৈধ) আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২শ’ থেকে ১৫শ’ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মহানগরীর প্রবেশের সবগুলো পথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বসানো হয়েছে তল্লাশী চৌকি। নগরীর নিরাপত্তায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশ সদস্যের সংখ্যাও। বাড়ানো হয়েছে টহল। থমথমে অবস্থার কারনে মার্কেট খুললেও দোকানপাট খুলেছে কম। পথচারী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তল্লাশীর নামে ও অপরাধীদের ধরতে গিয়ে সাধারণদের হয়রানি করা হচ্ছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। খুলনার ৩৬টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মী ও ১ জামায়াত নেতাকে আটক করেছে।
বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। অগণতান্ত্রিক পন্থায় বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে। ভীত এই সরকার পুলিশ দিয়ে ধড়পাকড়ের নামে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করছে। গ্রেফতার করছে। তিনি বলেন, আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তাছাড়া কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা পালন করা হবে।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি বলেন, আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই রায় কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়। তাই আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যে রায়ই হোক না কেনো তা মেনে নেয়া উচিত। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড করে আপনারা দেশের ক্ষতি সাধন করবেন না।