কঠোর পরিশ্রমে আত্মনির্ভরশীল কিবরিয়া

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-০৭ - ১৩:৫৯

ইউনিক ডেস্ক : নগরীর একটি জনবসতিপূর্ণ উপশহর দৌলতপুর। ইতিহাস ঐতিহ্যও রয়েছে শহরটির। রয়েছে দেড়শ’ বছরের পুরাতন বিদ্যাপীঠ, আশি দশকের রুপালী পর্দার সিনেমা হল, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারী ব্রজলাল কলেজ, রয়েছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি বেসরকারি স্থাপনা, ব্যাংক-বীমা অফিসসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। সবমিলিয়ে যেন পরিপূর্ণ সাজালো গোছালো একটি পরিচ্ছন্ন উপশহর দৌলতপুর। উপশহরটির আর্থ-সামাজিক  উন্নয়ণে চলে নানাবিধ প্রচেষ্টা। আশপাশের স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা তাদের জীবন জীবিকার তাগিয়ে উপশহরটিতে গড়ে তুলেছেন নানামুখি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নিজেদের প্রচেষ্টায় জীবন জীবিকার সংগ্রামে অনেকে ঘুরে দাড়িয়েছেন, নিজ প্রচেষ্ঠায় হয়ে ওঠেছেন আত্মনির্ভরশীল। তার বাস্তব উদাহরণ ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া। প্রায় দেড় যুগ ধরে সু-নামের সাথে দৌলতপুরস্থ ঐতিহাসিক মিনাক্ষী হলের উত্তর-পশ্চিম পাশে কঠোর পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন নিহারী ভুড়ি বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন হতে প্রায় দেড় যুগ ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে। অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রুচি সম্মত পরিবেশে খাবার পরিবেশন করা হয় সেখানে। প্রতিদিনই বিকাল হতে শুরু করে রাত পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলে কেনাবেচা। স্থানীয় এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখাকার নিয়মিত কাস্টমার। তবে বেশি ক্রেতার দেখা মেলে কুয়েট, বিএল কলেজের শিক্ষার্থীসহ দূর-দুরান্তের সর্বস্তরের মানুষ। খাবারের সুঘ্রান নিতে আসেন উঠতি বয়সী তরুন-তরুনী, নারী-পুরুষসহ নানা পেশাজীবি মানুষ। যথেষ্ট সরবরাহের পরও অধিকাংশ সময়ই নিমেষেই শেষ নিহারী-ভুড়ি ভর্তি পাত্রটি। চাহিদা থাকার কারণেই এমনটি ঘটে অধিকাংশ সময় জুড়ে। প্রতিদিনই কিবরিয়া নিহারী হাউজে সরবরাহ করা হয়ে থাকে প্রায় ৪০ কেজি গরুর পায়া, প্রায় ৩০কেজি ভুড়ি আর ২৫কেজির মতো আটা। পাশ্ববর্তী দৌলতপুর বাজারের মাংস পট্টি হতে প্রতিদিন সরবরাহ করে নিহারী তৈরীর পায়া, ভুড়ি প্রভৃডু। দিনভর হাঁড় ভাঙা পরিশ্রমের পর বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়ে থাকে খাবারগুলি, যা প্রতিষ্ঠানটি সত্ত্বাধীকারি মোঃ গোলাম কিবরিয়া নিজেই করেন বলে জানা গেছে। তার প্রতিষ্ঠানটির বদৌলতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে আরো গোটা কয়েক বেকার যুবকের। তারাও আনন্দ চিত্তে পেশা হিসাবে নয়, মনপ্রাণে ভালোবেসে আত্মনিয়োগ করেছেন কর্মে। সন্ধ্যা নামতে না নামতে দল বেঁধে  হাজির হন প্রায় সকল বয়সী ক্রেতাগণ, দেখা যায় উপচে পড়া ভীড়। তবে গোটা সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার ক্রেতা সাড়া মেলে নয়ন জোরানো। আত্মতৃপ্তি নিয়ে চলে ভোজন আর গল্প সল্প। নিহারী আকার অনুসারে ৮০টাকা হতে শুরু করে ২০০টাকা পর্যন্ত, ভুড়ি হাফ প্লেট ৬০টাকা ও ফুল প্লেট বিক্রি হয় ১২০টাকায়, রুটি প্রতি পিছ ১০টাকা।

প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ গোলাম কিবরিয়া জানান, লোকে কি বলে যায় আসেনা, আমি প্রতিষ্ঠানের মালিক নয়, সামান্য একজন কর্মচারী মাত্র। আমার এখানে যারা খেতে আসেন তাদের সার্ভিস দেওয়াই আমার কাজ। আপ্রাণ চেষ্টা করি ভালো মানের খাবার পরিবেশন করার জন্য, তারপরও বলবো আমি ভুলের উর্ধে নয়, হয়তো ক্রেতাদের মনের মতো খাবার পরিবেশন নাও হতে পারে, তবে পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ সর্ব বিষয়ে পরিপূর্ণ সার্ভিসের চেষ্টার কমতি রাখিনা। আমি বিশ্বাস করি জীবনে কিছু করতে গেলে অর্থ্যাৎ আত্ম স্বাবলম্বী হতে গেলে নিজ পরিশ্রম ও বাবা মায়ের দোয়া ছাড়া সম্ভব নয়। আমার প্রতিষ্ঠানের খাবার খেয়ে যদি কোনো ক্রেতা সুনাম করে থাকে ওঠার আমার জন্য যথেষ্ট, গর্বের আর আনন্দের।