করোনাভাইরাস: দেশে ২৩ রোগীর বিপরীতে আক্রান্ত একজন চিকিৎসক

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-১৬ - ১৩:৫২
ঢাকা অফিস : দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম রোগী শনাক্তের ৩৯ দিন পর দেখা যাচ্ছে, প্রতি ২৩ জন রোগীর বিপরীতে আক্রান্ত হয়েছেন একজন চিকিৎসক। এই হারে চিকিৎসক আক্রান্ত অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ই মার্চ। ৩৯ দিন পর দেখা যাচ্ছে, মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৩১ জন। এরমধ্যে চিকিৎসকই ৫৪ জন। অর্থাৎ প্রতি তেইশ জন রোগীর বিপরীতে একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন।

চিকিৎসক আক্রান্তের এই উচ্চহারের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যে রয়েছে: রোগীদের রোগের তথ্য গোপনের প্রবণতা, চিকিৎসকদের মানসম্মত সুরক্ষা সরঞ্জামের সংকট এবং করোনা শনাক্তে পরীক্ষার সংখ্যা কম।

ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস’ সেফটি এন্ড রাইটস এর চেয়ারম্যান ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, ‘অনেক ডাক্তারকেই রেইনকোট পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। যেখানে লেখা আছে এন-৯৫, যেটা অনেক বেশি প্রটেক্ট করে। ভেতরে আসলে বাংলাদেশের কাপড়ে তৈরী একটা কোনরকমের একটা লোকাল প্রোডাক্ট। এই যে হরিলুট চলছে, দেশে চাল চুরির কথাও শুনছি আমরা। এদিকে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মাস্ক চোর বলে একটা কথা উঠেছে। এগুলা নিয়ে কেউ কথা বলছেনা। কিন্তু এরমধ্যে একটা আশার কথা হচ্ছে মার্চের ২৫ তারিখ থেকে আমরা দেখছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে করোনার ব্যাপারগুলো দেখছেন।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, চিকিৎসক আক্রান্তের হার কমিয়ে আনা না গেলে ভেঙে পড়তে পারে স্বাস্থ্যসেবা। ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন আরও জানান, ‘দুইশোর বেশি ডাক্তার এই মূহুর্তে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। যদি তারা হোম কোয়ারেন্টিনে যায় তাহলে হাসপাতালটা কারা চালাবে? আমরা কিন্তু একসময় চিকিৎসক সংকটেও পড়ে যেতে পারি।’

সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় করোনাভাইরাস চিকিৎসার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিকল্প চিকিৎসক তৈরি রাখার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা নবীন চিকিৎসকদের ডেকে তাদের করোনাভাইরাসের বিষয়ে ট্রেনিং দিচ্ছি। তারা যেন কাজ করতে পারে। আইসিইউ নাই, এগুলো ঠিক করতে হবে। এখানে ডাক্তাররা কোয়ারেন্টিনে গেছেন, গ্যাপ হচ্ছে। এরমধ্যে ডাক্তার পাঠানো। এসব আমরা তড়িৎ গতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাচ্ছি।’

অবশ্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি থাকার কথা বলে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।