সদা সত্য পথে চলতে মানুষকে মানবতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন ফকির লালন
এস এম জামাল, কুষ্টিয়াঃ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেছেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ সকল ধর্মের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে সদা সত্য পথে চলতে মানুষকে মানবতাবাদীর পথে ডাক দিয়ে ছিলেন। তিনি অহিংস মানবতার ব্রত নিয়ে মানুষের কল্যাণে অসংখ্য গান সৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীত কোন ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়ীতে লালন একাডেমির আয়োজনে বাউল সম্রাটের স্মরণোৎসবের ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, লালন ফকির জাতহীন মানব দর্শন ও মানবতার ভাবধারাকে প্রতিষ্ঠিত করতে একটি অসাম্প্রদায়িক সাম্যের সমাজ চেয়ে ছিলেন তিনি। লালন মানুষকে শিখিয়েছিলেন কোন ধর্মের মধ্যে আবদ্ধ থেকে সম্প্রীতি বজায় রাখা যায় না। সকল ধর্মের উপর মানব ধর্ম। ধর্ম একটি উৎসব। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আর এই বিষয়টি ভাবতে শিখিয়েছে ফকির লালন সাঁই। ফকির লালন এর চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে সমাজের সকল প্রকার হানাহানি কাটাকাটি দুর করা সম্ভব। এই মরমী সাধকের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা না থাকলেও তিনি ছিলেন আধুনিক সমাজ বিন্যাসে স্ব-শিক্ষিত। তাঁর জ্ঞানের ভান্ডার আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। ধর্ম আর জাতি ভেদাভেদ ভুলে মানুষের কল্যাণে কি অসীম মর্মকথা বলেছেন তিনি। আজকের সমাজের এসব বর্বরতা ও জাতিকে বিভক্তির হাত থেকে বাঁচাতে লালনের মানবতার কল্যানের আর্দশকে গ্রহন করতে হবে। আসুন এই মহামানবের মানব দর্শন অনুসরন করে দেশটাকে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি জহির রায়হানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম মেহেদী হাসান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজ্বী রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খাঁন, সাধারন সম্পাদক আজগার আলী, কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খাঁন, কুষ্টিয়া কোর্টের জিপি এ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মাসুম, পিপি এ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী, কুমারখালী পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন, শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আগত অতিথিদের কুষ্টিয়া লালন একাডেমীর পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া, ক্রেষ্ট ও আত্মসুদ্ধির প্রতীক একতারা উপহার দিয়ে বরণ করে নেন। আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে লালন মঞ্চে বিভিন্ন শিল্পি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে লালন সংগীতি পরিবেশিত হয়। এতে সংগীত পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতিনামা শিল্পীবৃন্দসহ লালন একাডেমীর স্থানীয় শিল্পিরা। এর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি মিথ্যাচার করে লিফলেট দিয়েছে। তত্বাবধায়ক আমলে দুই নেত্রীর নামেই মামলা হয়েছিল।পরবর্তিতে দুই নেত্রীই মামলা বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেন।মেরিট না থাকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা টেকেনি। কেননা দুর্নীতি যাতে না হয় সেই জন্যে শেখ হাসিনার সরকার নাইকো চুক্তি গ্রহন করেনি। অন্যদিকে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান’র নির্দেশে তারা নাইকোর সাথে চুক্তি করে। যার কারণে বেগম খালেদা জিয়া এ মামলার আসামী হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। একই সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার অপর একটি মামলা বাতিল হয়। তার মানে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।’ হানিফ আরও বলেন, ‘বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলার মেরিট ছিল বলে মামলাটি চলেছে। সেটি আজ প্রমাণীত। এর সাথে সরকারের কোন সম্পর্ক নেই।’