(নিজস্ব সংবাদদাতা/প্রতিনিধি, খুলনা): খুলনা জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠনের পর প্রায় সাড়ে পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিতে পারেনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি কাউন্সিল ছাড়াই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মো. আরাফাত হোসেন পল্টুকে সভাপতি ও মুশফিকুর রহমান সাগরকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। তখন বলা হয়েছিল, দ্রুতই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত ৮ বার পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দিয়েও অজানা কারণে তা পূর্ণতা পায়নি। অবশ্য, একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দলীয় অন্তঃকোন্দলই দায়ী খুলনা জেলা ছাত্রলীগ কমিটি অপূর্ণাঙ্গর জন্য। যাই হোক না কেন অবশেষে ২৯ জুলাই, শনিবার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর জানান, “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশ অনুযায়ী গত বছরের ২০ জুন তারিখের ভিতর খুলনা জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দিলেও তা অনুমোদন হয়নি। গত ৩জুন ২০১৭ তারিখে ছাত্রলীগ খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় জেলা ছাত্রলীগের সহ¯্রাধিক নেতা-কর্মীর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও উপজেলা কমিটি পূনর্গঠনের দাবির মুখে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ও সাধারণ সম্পাদক ৭২ ঘন্টার মধ্যে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিবে বলে ওয়াদা করলেও অজানা কারণে তা প্রতিফলিত হয়নি। গত ১১ ও ১২ জুন ঢাকায় ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন ও উপজেলা কমিটি পুনর্গঠনের মৌখিক আশ্বাসের প্রেক্ষিতে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। গত ১৯ জুলাই আবারও পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার জন্য বলা হয় সে অনুযায়ী নতুন ভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দিয়েও অদৃশ্য কারণে তা প্রতিফলিত হয়নি।” ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানায়, দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বর্তমান পল্টু-সাগর কমিটি দলের সকল কর্মসূচি, জাতীয় এবং স্থানীয় কর্মসূচি পালন করে এসেছে। যে সকল কর্মসূচির পালন করে সারাদেশ ব্যাপি সাড়া ফেলেছিল তার মধ্যে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কটুক্তি করায় তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, হেফাজত বিরোধী আন্দোলনে শক্ত রাজপথে অবস্থান, খুলনায় রাজাকার খান-এ-সবুর সড়কের নামফলক অপসারণ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে জনমত গঠন, কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে খুলনায় গণজাগরণ মঞ্চের আদলে অবস্থান কর্মসূচি। এছাড়াও অন্যান্য যে সকল কর্মসূচী সম্পন্ন করেছে তার মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপণ, অস্বচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, এস,এস,সি ও এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন এবং পরীক্ষার রুটিন বিতরণ, সেভ ক্যাম্পাস-ক্লিন ক্যাম্পাস প্রোগ্রাম, স্কুল ভিত্তিক বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগীতা আয়োজন, ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের উপর আলোচনা প্রতিযোগীতার আয়োজন, বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও ৫ই জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মাঠে সক্রিয় দায়িত্ব পালন উল্লেখযোগ্য। খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন পল্টু জানান, “পাঁচ শতাধিক পদহীন জেলা ছাত্রলীগের (নিয়মিত ছাত্র) কর্মীদের নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ও সকল জাতীয় কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে আসছি। কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না দেওয়ার কারনে তাদের পরিশ্রমের মূল্যায়ন অর্থাৎ তাদের পরিচয় দেওয়ার মত কিছুই করা সম্ভব হয়নি। আমরা তাদের কাছে ঋণী, তাদের সকল দায়ভার আমাদের কাঁধে।” এদিকে ২৯ জুলাই সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের হতাশা ও আক্ষেপ দূর হবে এমনটা আশা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের। বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর এ প্রতিবেদককে বলেন, তার অনুসারীর মধ্যে সভাপতি প্রার্থী মোঃ ইমরান হোসেন ইমু। কিন্তু বর্তমান সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন পল্টু’র অনুসারীদের মধ্যে থেকে কারা হচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এ বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।