কোন ধান না থাকলেও মিনিকেট চালে বাজার সয়লাব

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-১৪ - ১৫:১৪

খুলনা : মিনিকেট ধান না থাকলেও, বাজার সয়লাব কথিত এ চালে। নিষিদ্ধের পরও বিক্রি হচ্ছে অবাধে। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার কারণেই বাজারে আসছে কথিত এ চাল।

খুলনার বেশ কয়েকটি অটোরাইস মিলে মোটা চাল ছেঁটে ‘মিনিকেট’ চাল করা হচ্ছে। আর বাজারে মিনিকেট নামে রংবেরঙের মোড়কে ছড়িয়ে পড়ছে এ চাল। মিল মালিক ও বিক্রেতারা অকপটে তা স্বীকার করে ‘মিনিকেট’ তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করেন। জেলার অধিকাংশ রাইসমিলের চাতাল বন্ধ থাকলেও কয়েকটি মিলে মোটা চাল ছেঁটে মেটিকেট চাল তৈরীতে ব্যস্ত আছে।

 নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অটোরাইস মিলের এক স্বত্বাধিকারী বলেন, মেশিনে চালটিকে ঘষে পলিশ করে চিকন করা হয়। পরে সেটি মিনিকেট হিসেবে বিক্রি করা হয়। মিনিকেট বলে না বিক্রি করলে সেটির ভালো দাম পাওয়া যায় না।

চাল বিক্রেতাদের দাবি, ভোক্তাদের ব্যাপক চাহিদার কারণেই এ চাল বিক্রি করছেন তারা। এক বিক্রেতা বলেন,  ‘ব্রি-২৮ চালকে করে ‘মিনিকেট’ নাম দেয়া হয়েছে। আসলে মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন চালের নাম রাখা হয়েছে। যেমন একজনের পাঁচ ছেলে, তাদের পাঁচটা আলাদা আলাদা নাম। এখানে প্রতারণার কিছু নেই। ভোক্তারা চাল দেখেই নিচ্ছেন।’

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা যখন মিনিকেটের বস্তা করি, তখন সবার সমস্যা হয়। কিন্তু ভারত থেকে আমদানি করা চাল তো মিনিকেট হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আনা  প্রতিটি বস্তায় মিনিকেট উল্লেখ আছে। যেমন- রাজভোগ মিনিকেট চাল। কিন্তু ওই ক্ষেত্রে কোনো কথা হচ্ছে না।’

এদিকে ভোক্তারা বলছেন, চিকন চাল মনে করেই মিনিকেট কিনছেন। এক ভোক্তা বলেন, মিনিকেট নামের কোনো চালই নেই। এটি জনগণের সঙ্গে  প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।

অন্যদিকে কৃষি বিভাগের মতে, এটি ভোক্তাদের সঙ্গে  প্রতারণা। এ বিষয়ে খুলনা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, মিনিকেট প্যাকেটজাত করে অনেকেই বিক্রি করছেন, যা একধরনের প্রতারণাই। এর জন্য সবার পক্ষ থেকে একটি শক্ত ভূমিকা নেয়া উচিত।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি আশরাফ-উজ জামান বলেন, বিভিন্ন বাজারে বিক্রেতারা প্রতারণার মাধ্যমে ভোক্তাদের নিকট এই নকল মিনিকেট চাল বিক্রি করে চলেছে। মিনিকেট নামে কোন ধান নেই। তাহলে মিনিকেট চাল আসবে কোথার থেকে। সমস্তই মিল মালিকদের কারসাজি। তারা মিনিকেট তৈরী করে বাজারে ছাড়ছে আর বিক্রেতারা ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা করছে। এ  ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।