কয়রা কাশির হাটখোলা বেহাল সড়কে ঝাঁকুনি ও ধুলার কষ্ট

প্রকাশঃ ২০১৯-০৫-২৪ - ১৩:৫৬

ইমতিয়াজ উদ্দিন, কয়রা : কয়রা সদর থেকে কাশির হাটখোলা খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি দিয়ে চলতে হয় নাক-মুখ ঢেকে। রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল কিংবা ইঞ্জিন ভ্যান, ট্রলী চলাচল করলে ধুলোয় একাকার হয়ে যায়। কিছুই দেখা যায় না। দরজা-জানালা বন্ধ করেও ঘরে থাকা যায় না। তখন নাকেমুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে থাকতে হয়। রান্না-বান্নাও করা যায় না। সন্তানদের খেতে দেওয়া যায় না। গাড়ির শব্দ শুনলে ভাতের থালা নিয়ে ঘরের ফাঁকা জায়গায় চলে যেতে হয়। কথাগুলো কাশিরহাট সড়কেরে পাশে বসবাসরত মানুষদের। অবস্থা বর্তমানে এতটাই শোচনীয় রুপ নিয়েছে যে সড়কের অবস্থা দেখে বোঝার উপায় নেই এতে একসময় পিচ ঢালাই ছিল, ভাঙাচোরা এবড়োখেবড়ো সড়কে ঝাঁকুনি সয়ে গন্তব্যে যেতে হয় লোকজনকে। এ ছাড়া ভাঙা রাস্তায় ধুলাবালুর যন্ত্রণা তো আছেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়রা উপজেলা সদর হতে বেদকাশী কাছারীবাড়ি হয়ে কাশির হাটখোলা খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ রাস্তাটি প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। সড়কটির পিচের আস্তারণ উঠে গেছে। ধুলাবালু উড়ছে চারদিকে।আশপাশের ঘর-বাড়ি, দোকান আর গাছপালাও লাল ধুলায় ছেয়ে গেছে। সম্পুর্ণ রাস্তাটি জুড়ে ছোট বড় গর্ত। সড়কের বেশির ভাগ জায়গায় গর্তের গভীরতা ও আকার এতটাই বড় যে ছোট-বড় যেকোনো ধরনের গাড়ি উল্টে যেতে পারে যেকোনো সময়। দুর্ঘটনার ভয়ে যানবহনগুলো ধীরে ধীরে যাতায়াত করছে। জনদুর্ভোগ দেখে স্থানীয়দের প্রশ্ন, রাস্তাটির সংষ্কারের দায়িত্ব কার ? অথচ কয়রা সদরের দক্ষিণাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পাতাখালী এলাকার মানুষের কয়রা উপজেলা সদর ও খুলনা জেলা সদরে যাতায়াতসহ মালামাল আনা নেয়ার এটাই একমাত্র রাস্তা। দক্ষিণ বেদকাশী ও উত্তর বেদকাশীর পুলিশ ক্যাম্প, ফরেস্ট অফিস, কাস্টমস অফিস, ওয়াপদা অফিস, যেখানে যাতায়াতের এটাই একমাত্র রাস্তা। প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোট-ছোট ছেলে-মেয়েরা এ পথ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে এ পথ দিয়ে উপজেলা সদর তথা জেলা সদর খুলনায় যাতায়াত করে। গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি বিগত বর্ষাকাল শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেরামতের উদ্যোগ গ্রহন করলেও শেষ পর্যন্ত বরাদ্দ না মেলায় মেরামত কাজে হাত দেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে উত্তর ও দক্ষিন বেদকাশি ইউনিয়ন দু’টির ৫০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশায় উদ্বিগ্ন এলাকার জনসাধারন।
কয়রা সদরের মধ্যবিল এলাকার বাসিন্দা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় গাড়ি চলার সময় প্রচন্ড ঝাঁকুনি হয়। এতে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে স্থির বসে থাকা যায় না। শিশু-নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের বেশি কষ্ট হয়। তিনি বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যদি সঠিকভাবে জনসাধারণের জন্য কাজ করতেন, তাহলে কি সড়কের এই দশা হতো?
এলাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, আইলার পর সর্বশেষ ২০১৩ সালে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ রয়েছে দায়সারাভাবে কাজ করা, নিন্মমানের বিটুমিন ব্যবহার ও থিকনেস কম দেওয়ায় দু’বছরের কম সময়ের মধ্যে রাস্তার কার্পেটিং নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম রাস্তাটির সংস্কার জরুরী উল্লেখ করে বলেন, ইতমধ্যে রাস্তার টেন্ডার এবং ওয়ার্ক অর্ডার সম্পুর্ণ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি দ্রুত সংষ্কার কাজ শুরু করে জন দূর্ভগ লাঘবে উপরস্থ কর্মকর্তাদেরকেও অবহিত করেছেন বলে জানান।