ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ
খুলনা : খুলনার খালিশপুর মেঘনা তেল ডিপো রোডের আর সিসি ঢালাইয়ের কাজে আবারও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছ। এবার নিম্নমানের ইট দিয়ে ঢালাইয়ের সময় এলাকাবাসী বাঁধা প্রদান করেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সাথে ঠিকাদারের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ট্যাংকলরীর শ্রমিকরা এগিয়ে এলে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করেছে সেখান থেকে সটকে পড়েন। উক্ত কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী কেসিসির মেয়র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় উত্তর কাশিপুর মেঘনা রোডের আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করতে আসেন কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুস ছালাম এর পক্ষে তসলিম উদ্দিন আশা। তিনি ঢালাই কাজের জন্য অতি নিম্নমানের ইট এনে মেশিন দিয়ে ভাংতে শুরু করার নির্দেশ দেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ইটের মান নিম্ন হওয়ায় বাঁধা প্রদান করে। ঠিকাদার তসলিম উদ্দিন আশা উত্তেজিত হয়ে এলকাবাসীর সাথে খারাপ আচরণ করে জোরপূর্বক নিম্নমানের ইট ভাঙ্গা শুরু করেন। এতে এলাকাবাসী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মেঘনা রোডে ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়। স্থানায়ী কয়েকজন সাংবাদিক নিম্নমানের ইটের বিষয়ে প্রশ্ন তুললে ঠিকাদার পত্রিকার বিষয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন। অন্যান্য সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন।
এসময় উপস্থিত তেল ব্যাবসায়ী গোলাম রহমান কচি জানান, মেঘনা রোডর আরসিসি কাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকী কাজের জন্য আবরও নিন্ম মানের ইট, সিলেট স্যান্ড এনেছে বলে অভিযোগ করেন। খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ও ট্যাংকলরী চালক সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন অতি নিম্নমানের ইট বালি দিয়ে ঠিকাদার আরসিসি ঢালাই করেছেন। ঢালাইয়ে কিউরিংও সঠিকভাবে হয়নি। তাই এ ঢালাই সহজে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে অভিযোগ করেন। নিম্নমানের কাজ করে ঠিকাদার কাজের টাকা লুটপাট করার চেষ্টা করছেন বলেও রোডের বাসিন্দরা অভিযোগ করেন। ঠিকাদারের অনিয়মের বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পত্র দিয়েছেন এলাকাবাসী।
ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নুর ইসলাম ও সাধারণ সম্পদ আলী আজিমসহ শতাধিক এলাকবাসী এ অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। তাদের অভিযোগ দীর্ঘদিন পরে প্রাত্যাশিত মেঘনা রোডের উন্নয়নের কাজের জন্য কেসিসি কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছেন। ঠিকাদার ইতিমধ্যে অর্ধেক রাস্তা আরসিসি ঢালাই সম্পন্ন করেছেন। ঢালাই করার সময় কাজের মান সন্তোষজনক না হওয়ায় মেয়রকে জাননো হয়েছে। গত ২ সপ্তাহ আগে কেসিসির মেয়র মনিরুজ্জামান মনি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তখন মেয়র ৭নং ওয়ার্ডের কাজগুলি সঠিক মানের করার নির্দেশ দেন। মেয়রের নির্দেশ প্রদানের পরেও সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ইচ্ছামত কাজটি করেছে ঠিকাদার বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন আবেদনকারীরা।
এ ব্যাপারে কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ লিয়াকত আলী খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কাজটি ভাল করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিম্নমানের ইট গুলি বাতিল করে সঠিক ইট ক্রয় করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, বলেন ঠিকাদারকে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়েছে। সিডিউল ছাড়া কাজ করলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা বলে তিনি জানান। এর আগে গত ১৭ নভেন্বর ৯ ইঞ্চির স্থলে ১০/১২ ইঞ্চি ফাকা করে রড বাঁধে এবং রডের খাচার নীচে ব্লক (টিক) দিয়ে খাচা কিছুটা উচু রাখার কথা সিডিউলে থাকলেও সেটা না করে তড়িঘড়ি করে আর সিসি ঢালাই দেয়ার কাজ শুরু করে ঠিকাদার। যা নিয়ে এলাকাবাসী ও ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে বাক বিতন্ড হয়। মেয়র এসে বিষয়টি সুরাহ করে সঠিক ভাবে কাজ করা নির্দেশ দিয়ে ছিলেন। তখন বিষয়টি থেমে গেলেও এবার নিম্নমানের দিয়ে ঢালায়ের কাজ করার সময় এলাকাবাসী ঐ ঠিকাদারকে ধাওয়া দেয়। এদিকে ১১ নং ওয়ার্ডে একই ঠিকাদার কলেজিয়েট স্কুল নির্মানের কাজ পেয়েছে বলে জানাগেছে। সেখানেও আরো বড় ধনের অনিয়মের আশংকা করছে খালিশপুরবাসী।