খুকৃবির সাবেক ভিসি ও বর্তমান রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা নেয়ার নির্দেশ

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-১৩ - ১৪:৩৯

খুলনা : খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শহীদুর রহমান খান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের নামে সোনাডাঙ্গা থানায় ধর্ষণের মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, খুকৃবির অস্থায়ী অফিসের পঞ্চম তলায় থাকতেন সাবেক উপাচার্য। সেখানে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রেজিস্ট্রার ওই নারীকে খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন। ওই নারী প্রতিদিন খাবার পৌঁছে দিতেন। সেই সুবাদে তাকে বিভিন্ন সময়ে ‘কুপ্রস্তাব’ দিতে থাকেন উপাচার্য। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খাবার দিতে গেলে পরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় ওই নারীকে ধর্ষণ করেন উপাচার্য।

পরে রেজিস্ট্রার ওই নারীকে বলেন, ‘আজকের ঘটনা তুমি কাউকে বলবে না। তাহলে তোমার চাকরি থাকবে না। আর স্যারকে বলে স্যারের সাথে তোমার বিবাহ করিয়ে দিব। তুমি তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে দাও।’

আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, ওই নারী চাকরি বাঁচাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিসি ওই নারীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়াদ শেষ হলে খুলনা বদলি হয়ে যান উপাচার্য। তিনি ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক ভিসি খুলনায় এলে ওই নারী তার সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বিয়ে করার আকুতি জানান, তবে ভিসি তাতে রাজি হননি।
পরে ওই নারী স্বজনদের বিষয়টি জানিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই নারী প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার হিসেবে চাকরি করতেন। পরে তাকে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সরকারি (পিএ) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

উপাচার্য গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তার মেয়াদ শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে নিজের বাড়িতে থাকেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনকে অবৈধভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুর রহমান খানের সঙ্গে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘ওই ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ‘আর যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটেই থাকে, তাহলে সেটি ওই নারী ও ভিসির একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটি আমার জানার কথা নয়।’