খুমেকে’র ডেপুটি নার্সিং সুপার রোকেয়ার দুর্নীতি-৪

প্রকাশঃ ২০২৩-০৯-১৭ - ০৯:২০

নিজের অপরাধ চাপা দিতে নেয়া হচ্ছে সাদা কাগজে স্বাক্ষর

ইউনিক ডেস্ক : খুমেক হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপার রোকেয়া তার দুর্নীতি চাপা দিতে নার্সদের নিকট থেকে সু-কৌশলে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিতে শুরু করেছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় তার দুর্নীতির খতিয়ান উঠে আশায় তিনি হয়ে উঠেছেন বেপরোয়া। প্রতিদিন অন্য সেবিকাদের তার কক্ষে নিয়ে ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিচ্ছেন। স্বাক্ষর না দিলে তাদেরকে অন্য ওয়ার্ডে বদলী করার ভয় দেখানো হচ্ছে। ডেপুটি নার্সিং সুপার রোকেয়ার বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সে কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তর থেকে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এখন সে সব চাপা দিতে সাদা কাগজে স্বাক্ষর গ্রহণ চলছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সুপার ভাইজার বলেন, রোকেয়া দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চালিয়ে গেলেও যেন দেখার কেউ নেই। এখন তার দুর্নীতি চাপা দিতে এবং তার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের জব্দ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে সেটাই ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
সিনিয়র স্টাফ নার্স শীলা সরদার বলেন, রোকেয়া বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠান করার নামে নার্সদের নিকট থেকে টাকা উত্তোলন করেন। অথচ হিসাব চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কোন হিসাব দিতে চায় না। জুতা পায় দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বেদীতে উঠেছিলেন। তিনি তার ইচ্ছা মতই কাজ করেন। তিনি বলেন, আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। সহকর্মীদের নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি পত্রিকা অফিসে যেয়ে নিজেকে ধুয়াতুলসী প্রমাণের চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ উঠেছে যেখানেই টাকার গন্ধ সেখানেই রোকেয়া তার দোসর হোসনেয়ারাকে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেন। আবার এই হোসনেয়ারাকে দিয়েই ঢাকা নার্সিং অধিদপ্তর ম্যানেজ করেন রোকেয়া। এই হোসনেয়ারার কিছুই কেউ করতে পারবে না, এমন কথার প্রচলন আছে হাসপাতালে।
পূর্বের পরিচালক মুন্সি রেজা সেকেন্দারের জারী করা এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, ইনচার্জরা নাইট করবে না। এই আদেশ বহাল থাকা সত্ত্বেও তিনি জোর করে তার অপছন্দের ব্যাস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডের ইনচার্জদের নাইট করাতে বাধ্য করেন। আবার তার পছন্দের নার্সদের নাইট ডিউটি দেন না। তাছাড়া নাইট ডিউটির সময়েও রয়েছে বৈষম্য। তার পছন্দের বা মনোনীত নার্সরা নাইট ডিউটি করেন ৩১/৩৫ দিন পরপর। পক্ষান্তরে অন্যদের দিয়ে তিনি ২১ দিন পরপর নাইট ডিউটি করান। যা নিয়ে সাধারণ নার্সদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলেই তিনি বলেন, আমি কাউকে কোন প্রকার কৈফিয়ত দিব না। আমি যেটাই করব সেইটাই ঠিক। আমি এখানকার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
উল্লেখ্য, এভাবে পূর্বেও সাধারণ নার্সদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে সাদা কাগজে সই নিয়েছে রোকেয়া। তারপর ফাঁকা জায়গায় ইচ্ছামত লিখে আফসানা বিলকিস, শিলা সরদার ও বার্নার্ডের বিরুদ্ধে ঢাকা নার্সিং অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়। এটা তার পুরনো কৌশল।