খুলনার খানজাহান আলী দীঘি রক্ষার নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশঃ ২০১৭-১২-১৪ - ২১:১০

খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের মুজগুন্নী-খালিশপুর এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলী দীঘি সুরক্ষার নির্দেশ প্রদান করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা  প্রদান করেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত এক জনস্বার্থমূলক মামলার (নং ১৬৭৬৭/২০১৭) প্রাথমিক শুনানী শেষে মহামান্য আদালত উল্লেখিত দীঘি সুরক্ষা, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে বিবাদীগণের ব্যর্থতা কেন বেআইনি, আইন বহির্ভূত ও জনস্বার্থের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না এবং কেন ঐতিহাসিক দিঘীটি ভরাটের কবল থেকে সংরক্ষণ করার ও ভরাটকৃত অংশ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ প্রদান করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসাথে দীঘিটির আকার ও আকৃতি পরিবর্তন করা থেকে বিরত থাকতে ভরাটকারী মো: জাকির হোসেন মৃধা, শেখ মারুফ হোসেন ও কাজী মাহবুবুর রহমান মৃধার উপর অন্তরবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা আদেশ প্রদান করেন যা ৬ মাস পর্যন্ত বহাল থাকবে। সেইসাথে ভরাটকারী হিসেবে চিহ্নিত বিবাদীগণের কার্যক্রম কঠোরভাবে তদারকিপূর্বক দিঘীটির বর্তমান অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য সম্বল্বিত প্রতিবেদন মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন;  মহা-পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; চেয়ারম্যান, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; জেলা প্রশাসক, খুলনা; পুলিশ  কমিশনার, খুলনা মেট্টোপলিটন; পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর (খুলনা বিভাগ)-কে এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, মুজগুন্নী-খালিশপুর এলাকার মুজগুন্নী মৌজাস্থ সি.এস ৪৪২  (আর এস ২১৩০ ও ৫০৪৭) নং দাগে উল্লেখিত ঐতিহ্যবাহী দীঘিটি অবস্থিত যা এলাকাবাসীর কাছে “খান জাহান আলী” দিঘী নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন যাবত উল্লেখিত এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান আধার হিসেবে এ দিঘী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। সুপেয় পানির সংকটে থাকা নি¤œবিত্ত এলাকাবাসী এ দিঘীর পানি তাদের দৈনন্দিন নানা কাজে ব্যবহার করে থাকে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে এ দীঘির অবদান অনস্বীকার্য। মো: জাকির হোসেন মৃধা,  শেখ মারুফ হোসেন ও কাজী মাহবুবুর রহমান মৃধা নামক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি (মামলার অন্যতম বিবাদী) নিজেদের স্বার্থে জনগুরুত্বপূর্ণ এ দিঘী ভরাট করতে শুরু করলে এলাকাবাসীর আবেদনে বেলা জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করে যার প্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত দিঘীটি সংরক্ষণে উল্লেখিত রুল ও নির্দেশ প্রদান করেন।

এ মামলার বিবাদীগণের মধ্যে রয়েছেন সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়; সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়; মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন;  মহা-পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; চেয়ারম্যান, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; জেলা প্রশাসক, খুলনা; পুলিশ কমিশনার, খুলনা মেট্টোপলিটন; পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর (খুলনা বিভাগ);  মো: জাকির হোসেন মৃধা, ভরাটকারী;  শেখ মারুফ হোসেন, ভরাটকারী; কাজী মাহবুবুর রহমান, ভরাটকারী। বেলা‘র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী। তাঁকে সহযোগীতা করেন বেলা‘র আইনজীবী  এডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর ও এডভোকেট আলী মোস্তফা খাঁন।