স্থানীয় প্রভাবশালীর শেল্টারে একাধিক প্রতারনার অভিযোগ
ইউনিক ডেস্ক : নগরীর লবনচরা এলাকার রুহুল আমিন নামে এক চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে লবনচরা থানা পুলিশ। লবনচরার মেইন রোড বান্দা বাজার থেকে সোমবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই মামলার অপর আসামী মাসুম হোসেন তার ছেলে লবনচোরা থানার একটি নাশকতা মামলায় বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের খবরে স্থানীয়দের সস্তি ফিরেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটককৃত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবৎ লবনচরার মেইন রোড বান্দা বাজার এলাকায় বসবাস করছেন। লবনচরা এলাকার স্থানীয় এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় তারা দীর্ঘদিন জমি-জমার ব্যবসার নামে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন সময়ে ঐ প্রভাবশালীর মধ্যস্ততায় শালিশ-বৈঠক করে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। কিন্তু এ পর্যন্ত সাধারণ মানুষরা এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতে পারেন নি বলে জানা যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাই মাসের ২৫ তারিখ চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক রুহুল আমিনের কাছে থেকে সরল বিশ্বাসে ২ কাঠা জমি ২৩ লক্ষ টাকা চুক্তিতে রেজিষ্ট্রি বায়না করে ভুক্তভোগি। এ সময় প্রতারকরা ভুক্তভোগীকে জানান, পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে বায়নাকৃত জমির দখল ও পজিশন বুঝায়ে দেবে। এরপর বেশ কিছুদিন পার হওয়ার পর দখল ও পজিশন বুঝায়ে না দিলে জমিটি নিয়মানুযায়ী বুঝে নেয়ার জন্য ভূক্তভোগীউকিল নোটিশ প্রেরন করে প্রতারক চক্রটিকে। এরপর তাতেও প্রতারকরা কর্নপাত না করলে স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে ভূক্তভোগী জানতে পারেন, উক্ত জমিটি পূর্বেই সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের কাছে মর্গেজ রেখেছে প্রতারকরা। এরপর লোকজন জানাজানি হলে আরো জানা যায়, জমিটি ৩৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অন্যত্র বিক্রয় করেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক রুহুল আমিন ও তার ছেলে।
অন্য একটি অভিযোগে জানা যায়, প্রতারক চক্রটির শেল্টার দাতা প্রভাবশালী ঐ ব্যক্তি চলতি বছরের ২০ শে ফেব্রুয়ারী লবনচরা এলাকার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করার জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীকে মারধরের ঘটনায় তার ছয়জন সঙ্গীসহ র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়।
চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক চক্রের শিকার ভূক্তভোগী শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি একজন সাধারন চাকুরীজীবি। গ্রামের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রয় করে শহরে পরিবারসহ থাকার জন্য রুহুল আমিনের কাছে থেকে জমি ক্রয়ের জন্য বায়না রেজিস্ট্রি করি। কিন্তু আমার দেয়া টাকা ফেরত না দিয়ে মর্গেজের জমি ছাড়িয়ে একই জমি অন্যত্র বিক্রয় করে আমার সাথে প্রতারনা করেছে। যার কারনে আমার এখন পথে বসার মতো অবস্থা। আমি এর প্রতিবাদ করলে চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক চক্রের মূল হোতা রুহুল আমিনের ছেলেরা আমাকে নানা রকম হুমকি দেয়। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিশ বৈঠকে বসলেও প্রতারকরা আমাকে জমি বুঝায়ে না দিয়ে আমাকে উল্টো প্রান নাশের হুমকি দেয়ায় সংশ্লিষ্ট থানায় আমি সাধারন ডায়েরী করি, যাহার জিডি নং-১৩০৭। এরপর মাসুম (চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও প্রতারক রুহুল আমিনের ছেলে) আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, “পারলে টাকা আদায় করে নিস। আর জমি নিতে আসলে জমিতেই পুতে রাখব।” এরপর আমি বাধ্য হয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রতারনার মামলা দায়ের করি। যাহার মামলা নং-১৬৪/২৩।
এ বিষয়ে লবনচরা থানার উপ-পরির্শক প্রদীপ বৈদ্য জানান, গ্রেফতারকৃত রুহুল আমিনের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।