খুলনা : খুলনায় পাটকল শ্রমিক-কর্মচারীদের নতুন বছরের সূচনা হলো ধর্মঘট ও কর্মবিরতির মধ্য দিয়ে। বকেয়া মজুরিসহ ১১ দফা দাবিতে পাটকল শ্রমিকরা চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে বছরের প্রথম দিনও কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার সকালে স্ব স্ব মিল গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকরা। ফলে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত আট পাটকলের উৎপাদন চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, পাটকলগুলোতে শ্রমিকের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ধারাবাহিক আন্দোলন করলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রেখে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা। এ সময় দফায় দফায় মিছিল ও মিল গেটের সামনের সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালানো হয়।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ৮ সপ্তাহের মজুরির দাবিতে প্লাটিনাম জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় একে একে ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। এ চারটি মিল বন্ধের সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টার দিকে আটরা-গিলাতলা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ণ এবং যশোর অভয়নগরের জে জে আই জুট মিলের উৎপান বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আর শনিবার খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
পাটকলগুলোর সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট জুট মিলে প্রায় ৫ হাজার, প্লাটিনামে সাড়ে ৪ হাজার, স্টারে সাড়ে ৪ হাজার, দৌলতপুর জুট মিলে সাড়ে ৬শ’, ইস্টার্নে ২ হাজার, আলীমে দেড় হাজার এবং জেজেআই জুট মিলে ২ হাজার ৬শ’ এবং খালিশপুর জুট মিলে প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এসব পাটকলের শ্রমিকদের চার থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এসব মিলে শ্রমিকদের বকেয়া রয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
স্টার জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মোঃ বেল্লাল হোসেন মল্লিক বলেন, চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার সকালে স্ব স্ব মিল গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হয়েছে। ২ জানুয়ারির মধ্যে দাবি না মানা হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম জোনের শ্রমিক নেতাদের সাথে আমরা বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবো। সে কর্মসূচি কঠিন হতে পারে।