খুলনা : খুলনা মহানগরীর বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে এখন প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিচ্ছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী। শুরুতে গ্রাহক সুবিধার কথা বলা হলেও বর্তমানে প্রিপেইড মিটার নগরবাসীর কাছে আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাহকদেরকে অন্ধকারে রেখে এ সিস্টেম চালু করে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহকরা ক্ষোভে ফুসে উঠেছে। বিদ্যুতের ‘প্রি-পেইড মিটারের’ প্রতি অধিকাংশ গ্রাহকের অনাগ্রহ রয়েছে। প্রতি মাসে গ্রাহকদের প্রতিটি সিঙ্গেল ফেজ মিটারের জন্য প্রতি মাসে ৪০ টাকা এবং থ্রিফেজ মিটারের জন্য ২৫০ টাকা জমা দেয়ার সময়েই কেটে নেযা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার সকালে আবুল কালাম আজাদ নামের একজন গ্রাহক সকালে (খুলনা ওয়েস্ট জোনের ) তার প্রিপেইড মিটারের জন্য টাকা রিচার্জ করতে দিয়ে দিলেন দুই হাজার টাকা, কস্ট মেমোতে পেলেন ১৩৫৪.৭৬ টাকা। তিনি কাউন্টারে জিজ্ঞাসা করলে, সেখান থেকে বললো আমাদের কোনো কিছুই করার নেই, যেভাবে নির্দেশ আসে আমরা সেভাবেই চার্জ কাটি। দেখা গেলো তার মেমোতে মিটার বাবদ ২৫০ টাকা, ডিমান্ড চার্জ ৩০০ টাকা, ভ্যাট ৯৫.২৪ টাকা, মোট ৬৪৫.২৪ টাকা কেটে নেয়া হয়েছে ।
তিনি প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আর কত দিন আমরা এর ভুক্তভোগী হবো। এর কি কোনো প্রতিকার নেই। একটি প্রিপেইড মিটারের দাম কত হতে পারে মাসে যদি ২৫০ টাকা করে নেই বছরে সে নিচ্ছে তিন হাজার টাকা। প্রথমে ফ্রি বলে এখন টাকা নেয়া সম্পূর্ণ অবৈধ, এটা গ্রাহকের সাথে প্রতারণা।
একই সময় গ্রাহক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগেই ভালো ছিলো বিদ্যুৎ বিল কম আসতো, আর এখন কমতো দূরের কথা যে হয়রানি হতে হয়, লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এরপর এখন বারকোড চাপতে হয় একশটি আগে ছিলো পঁচিশটি, এটাও চাপতে কমপক্ষে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগে।
ওজোপাডিকো সম্প্রতি জানায়, এখন পর্যন্ত সংস্থাটি এ চারটি জোনে ৪৫ হাজার ৫০০ সিঙ্গেল ফেজ প্রি-পেইড মিটার লাগানো হয়েছে। যার প্রতিটি মিটারের মূল্য ৪ হাজার ৮শ’ টাকা। এছাড়া ১ হাজার ৫০০ মতো থ্রি ফেইজ মিটার লাগানো হয়েছে, যার প্রতিটির মূল্য ২০ হাজার টাকা। অবশিষ্ট মিটার পর্যায়ক্রমে লাগানো হবে বলে ওই সূত্র জানায়।
ওজোপাডিকো সূত্র আরও জানায়, বিদ্যুতের গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের সময় মিটার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। তবে এখন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিদ্যুতের মাসিক বিলের সাথে মিটারের টাকা আদায়ের জন্য। তাই গ্রাহককে প্রি পেইড মিটারের মূল্য মাসিক বিলের সাথে প্রদান করতে হবে। এমনিতেই একটি প্রি-পেইড মিটারের মেয়াদ ১০ বছর। আর এ ১০ বছরের মধ্যে মিটারটি নষ্ট হলে আবার নতুন মিটার সরবরাহ করা হবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ওজোপাডিকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।